পূর্বতন ইউপিএ সরকারের প্রস্তাবিত অর্ডিন্যান্স কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের উচিত ছিল পদত্যাগ করা। সম্প্রতি মন্টেক সিং আহলুওয়ালিয়ার বইয়ে ওই ঘটনার উল্লেখ প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করল বিজেপি।
মন্টেক সিং আহলুওয়ালির লেখা সাম্প্রতিক Backstage: The Story behind India's High Growth Years বইতে ২০১৩ সালের সেই ঘটনার বর্ণনা রয়েছে। অধুনা বিলুপ্ত প্ল্যানিং কমিশনের তত্কালীন প্রধান আহলুওয়ালিয়া তাঁর বইয়ে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত সাংসদ ও বিধায়কদের সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইউপিএ সরকারের আনা অর্ডিন্যান্স ‘সম্পূর্ণ কাণ্ডজ্ঞানহীন’ বলে তা ছিঁড়ে ফেলার নিদান দিয়েছিলেন রাহুল। তার জেরে পদত্যাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
আহলুওয়ালিয়া তাঁর বইয়ে লিখেছেন, আমেরিকা সফররত মনমোহন তাঁর সফরসঙ্গী মন্টেককে সেই সময় প্রশ্ন করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে তাঁর সরে দাঁড়ানো উচিত কি না। কিন্তু মন্টেক তাঁকে বোঝান, পদত্যাগ এই সমস্যার কোনও সমাধান দেবে না। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা দেওয়া অনুচিত।
আরও পড়ুন: ইন্দ্রকুমার গুজরালের কথা শুনলে রোখা যেত '৮৪ সালের শিখ-বিরোধী দাঙ্গা-মনমোহন সিং
মন্টেকের পরামর্শ মেনে দেশে ফিরে পদত্যাগ করেননি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। লেখক জানিয়েছেন, এর জেরে কংগ্রেস দলের মধ্যে একটি ফাটলের সূত্রপাত হয়। অর্ডিন্যান্সের প্রস্তাব পেশ করার সময় যে সমস্ত কংগ্রেস নেতারা সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছিলেন, তাঁরাই রাহুলের মন্তব্যের পরে তার বিরোধিতা করতে শুরু করেন। ফলে অর্ডিন্যান্স জারি করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হয় সরকার।
মন্টেক সিং আহলুওয়ালিয়ার সাম্প্রতিক বই যে বিতর্কের শুরুয়াত করেছে, সোমবার তাতে যোগ দিল বর্তমানে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি। দলের তরফে এ দিন মন্তব্য করা হয়েছে, রাহুল গান্ধীর অর্ডিন্যান্স ছিড়ে ফেলার ঘোষণার জেরে পদত্যাগ না করার জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওযা উচিত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর।
এ দিন দলীয় মুখপাত্র জিভিএল নরসিমহা রাও বলেন, ‘এই ঘটনায় মনমোহন সিংয়ের অসহায়তা স্পষ্ট হয়েছে। সেই সময় অর্ডিন্যান্স ছিঁড়ে ফেলার কথা বলে রাহুল গান্ধী শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীকে অপমান করেননি, সমগ্র মন্ত্রিসভারও তিনি মানহানি করেন। মনমোহনের কাছে যদি আত্মমর্যাদা গুরুত্বপূর্ণ হত, তবে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত ছিল। এবং তিনি তা করলে সনিয়া গান্ধীর কাছে রাহুলকে ক্ষমা চাইতে বলা ছাড়া উপায় থাকত না। এর জন্য দেশের কাছে মনমোহন সিংয়ের মার্জনা চাওয়া দরকার।’