মহাকুম্ভ মেলায় দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা সাধু, সন্তরা যেমন নজর কাড়ছেন, তেমনই নজর কাড়ছে সাধুদের একাংশের রাজকীয় সওয়ারি। বিলাসবহুল সেইসব গাড়ির তালিকায় রয়েছে - মার্সিডিজ বেঞ্চজ এসইউভি, রোলস রয়েস, ল্যান্ড রোভার ডিফেন্ডর এবং অডি!
মহাকুম্ভ মেলায় সাধু, সন্ত থেকে শুরু করে পুণ্য়ার্থী, ভক্তদের থাকার জন্য নানা ধরনের তাঁবু খাঁটানো হয়েছে। সেইসব অস্থায়ী মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের এপাশ-ওপাশ দিয়ে চলে গিয়েছে রাস্তা। আর সেইসব রাস্তাতেই দাঁড় করানো রয়েছে এইসব বহুমূল্য গাড়ি। যা দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় মহাকুম্ভে আসা সাধারণ পুণ্যার্থীদের।

সূত্রের দাবি, বহু ক্ষেত্রেই সাধুদের জন্য এইসব গাড়ির ব্যবস্থা করেন তাঁদের ধনী ভক্তরা। এবার মহাকুম্ভে যেসমস্ত দামি গাড়ি দেখা গিয়েছে, তার মধ্য়ে হুন্ডাই ক্রেটা, ফোর্ড এনডেভর, টয়োটা ফরচুনা, ইনোভা, মহিন্দ্রা জাইলো, টাটা সাফারির সংখ্য়া অনেকটাই বেশি।
আরও যেটা লক্ষ্যণীয়, তা হল - সাধুরা যে গাড়িগুলিতে চড়ে মেলাস্থলে এসেছেন, সেগুলির বেশিরভাগেরই রং হয় সাদা আর না হয় গেরুয়া। কারণ, এই দু'টি রঙের সঙ্গেই হিন্দু ধর্মের সম্পর্ক গভীর।

তাছাড়া, এই গাড়িগুলিতে যে সাধুরা সওয়ার হয়ে এসেছেন, তা গাড়িতে লাগানো পেল্লায় সব নেমপ্লেট দেখলেও বোঝা যাবে। তাতে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় সংগঠনের নাম, সাধুদের নাম, তাঁরা সংগঠনের কোন পদে রয়েছেন, সেই সমস্ত তথ্য লেখা রয়েছে।
তবে, এই গাড়িগুলি আর যাই হোক, সাধু সন্তদের সর্বত্যাগী স্নিগ্ধতা প্রতিফলিত করে না। বরং, এগুলি হল - ধন, ঐশ্বর্যের প্রতীক। যা মহাকুম্ভে আসা সেইসব লক্ষ লক্ষ সাধুর চরিত্রের সঙ্গে একেবারেই খাপ খায় না, যাঁরা রীতিমতো কষ্টসাধ্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে এখানে পুণ্যস্নান করতে আসেন।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, সাধু, সন্তরা নিজেরা অধিকাংশই এই ধরনের ঐশ্বর্যের বাড়াবাড়ি প্রকাশ পছন্দ করেন না। কিন্তু, তাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্য়ে কথা বলতেও চান না। তবে, নাম না প্রকাশের শর্তে কোনও কোনও সাধু বলছেন, বিভিন্ন আখারার এই ধরনের দামি গাড়ি থাকে। সেখানকার সাধুরাই এসব ব্যবহার করেন। আবার অনেক সময় ভক্তরাও এসব দেন।
সূত্রের দাবি, এমন অনেক মহার্ঘ্য গাড়ির মালিকের নাম খুঁজতে গেলে হয়তো দেখা যাবে, তা এমন কোনও একজন সাধুর, যিনি কোনও ধর্মীয় সংস্থা বা সংগঠনের বড় পদে বসে রয়েছেন। তাঁদের পীতধীশ্বর, মহা মণ্ডলেশ্বর, মহন্ত, মণ্ডলেশ্বর - এমন অনেক উপাধিতেই সম্বোধন করা হয়।