ফের যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠল পাকিস্তানের সেনাদের বিরুদ্ধে। বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারতীয় সেনাদের লক্ষ্য করে বিনা প্ররোচনায় গুলি চালায় পাক সেনারা। তার জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীও গুলি চালায়। তাতে দুপক্ষের মধ্যে তুমুল গুলির লড়াই শুরু হয়। ভারতীয় অধিকর্তারা দাবি করেছেন, এদিনের ঘটনায় পাক সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশ কয়েকজন পাক সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফের অশান্ত সীমান্ত, জম্মুর সাম্বা সেক্টরে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন পাকিস্তানের
উল্লেখ্য, এই ঘটনার আগের দিনই জম্মু জেলার আখনুর সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে জঙ্গিদের বোমা হামলায় একজন ক্যাপ্টেন সহ দুই ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছিলেন। তারপরেই কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টরে পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের বিষয়টি সামনে এল। জানা যাচ্ছে, ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি চুক্তি নবীকরণের পর থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা খুবই কম ঘটেছে। এটিই ছিল চলতি বছরের প্রথম যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা এবং পাঁচ দিনের মধ্যে চতুর্থ সীমান্ত আন্তঃসীমান্ত ঘটনা।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পাকিস্তানি সেনারা নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর তারকুন্ডি এলাকায় একটি চৌকিতে বিনা প্ররোচনায় গুলি চালায়। এর ফলে ভারতীয় সেনাবাহিনীও পালটা হামলা চালায়। দাবি করা হচ্ছে, বেশ কয়েকজন পাক সেনার নিহত হয়েছেন। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, পাকিস্তানি সেনা আধিকারিক নিহত জওয়ানদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
এদিকে, অন্য একটি ঘটনায় এদিন সন্ধ্যায় একই সেক্টরে ভুলবশত একটি ল্যান্ডমাইনের উপর পা রাখার সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন জুনিয়র কমিশনড অফিসার (জেসিও) সামান্য আহত হন। জানা গিয়েছে, ওই অফিসার জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ রোধে নিয়ন্ত্রণ রেখায় কড়া নজরদারি চালাচ্ছিলেন। সেই সময় বিস্ফোরণ ঘটে। আহত অফিসারকে সেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহ ধরে সীমান্তের ওপার থেকে শত্রুতামূলক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। তারফলে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পরিস্থিতি এখন বেশ উত্তেজনাপূর্ণ।
এর আগে সোমবার রাজৌরি জেলার নওশেরা সেক্টরের কালাল এলাকায় সীমান্তের ওপার থেকে একজন জওয়ান গুলিবিদ্ধ হন। তার আগে ৮ ফেব্রুয়ারি রাজৌরির কেরি সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে একটি জঙ্গল থেকে সেনাবাহিনীর একটি টহলদারি দলের কয়েকজন সদস্য জঙ্গিদের গুলিতে আহত হয়। জানা যাচ্ছে, জঙ্গিরা ভারতে প্রবেশের সুযোগের অপেক্ষায় ছিল।
এছাড়াও, ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যরাতে পুঞ্চ জেলার কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপার থেকে ভারতীয় সীমান্তে জঙ্গিরা অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে কিছু হতাহতের খবর পাওয়া গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সেনাবাহিনীর জওয়ানদের সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।