বৃহস্পতিবার স্থানীয় হিন্দু পরিবারগুলির সঙ্গে দিওয়ালির উৎসবে মাতলেন পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ। ওই দিন ৯০ সাহারা-ই-কুইদ-ই-আজমে দিওয়ালি পালন করেন তিনি।
উৎসবের সেই আবহে স্থানীয় সংখ্যালঘু পাক নাগরিকদের উন্নয়নের স্বার্থে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি পালন করবেন বলেও কথা দেন মরিয়ম।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, সম্প্রতি পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে বায়ু দূষণ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। যার মধ্যে সবথেকে শোচনীয় অবস্থা লাহোরের। চলতি সপ্তাহে পাকিস্তানের এই শহরকে বিশ্বের সবথেকে দূষিত শহর হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবারই মরিয়ম জানিয়েছিলেন, তিনি ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্তর্গত পঞ্জাব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানকে বায়ু দূষণ নিয়ে চিঠি লিখবেন। যাতে যৌথভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়।
মরিয়মের বক্তব্য ছিল, বায়ু দূষণের ফলে সীমান্তের দুই পারেই ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকরা আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই আন্তর্জাতিক কূটনীতি দূরে সরিয়ে, দুই দেশেরই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের এই সমস্যা মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করা উচিত।
প্রসঙ্গত, মূলত ধানের ফসল কাটার পর, রবি শস্যের চাষ শুরু হওয়ার আগে ভারতের পঞ্জাব রাজ্য এবং পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে কৃষকরা দ্রুত চাষের জমি ফাঁকা করার জন্য যে খড় পোড়ান, তার জন্যই দূষণ মারাত্মক হারে বাড়ে বলে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করা হচ্ছে। যদিও ভারতের পঞ্জাবে ইতিমধ্যেই কৃষকরা ফসলের খড় পোড়ানোর পরিমাণ অনেকাংশে হ্রাস করেছেন।
এই প্রসঙ্গে মরিয়মের বক্তব্য ছিল, বায়ুপ্রবাহ আন্তর্জাতিক সীমান্ত বোঝে না। সে তার মতোই প্রবাহিত হয়। তাই সামগ্রিকভাবে পঞ্জাবের দূষণ কমাতে হলে ভারতকেও এগিয়ে আসতে হবে এবং পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।
পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের সরকার ইতিমধ্যেই সেখানে 'ধোঁয়া বিপর্যয়' ঘোষণা করেছে। সেইসঙ্গে, 'গ্রিন লকডাউন' জারি করে বায়ুদূষণ হতে পারে, এমন সমস্ত কর্মকাণ্ডের উপর লাগাম টানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে, সরকার পক্ষ এইসব দাবি করলেও বাস্তবে দূষণ কমানো যায়নি।
তথ্য বলছে, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার সময় লাহোর শহরে 'বায়ুর গুণমান সূচক' (একিউআই) ছিল - ২৫৪! শুক্রবার সকালে তা কিছুটা কমে হয় ২১৭। অর্থাৎ - একিউআই অনুসারে, এই দুই দিনই লাহোরের দূষণের মাত্রা ছিল খারাপ।
দিওয়ালির উৎসবে সামিল হয়ে মরিয়ম নওয়াজ সংখ্য়ালঘু নাগরিকদের জন্য 'মাইনোরিটি ভার্চুয়াল পুলিশ সিচুয়েশন' তৈরির কথা ঘোষণা করেন এবং সংখ্য়ালঘু নাগরিকদের জন্য একটি বিশেষ ধরনের আইডি কার্ডও ইস্যু করেন।
মরিয়ম বলেন, 'যদি কেউ কোনও সংখ্যালঘু নাগরিকের উপর অত্য়াচার করেন, তাহলে আমি নিজে সেই অত্যাচারিত ব্যক্তির পাশে দাঁড়াব। আমরা সকলেই পাকিস্তানি। এবং এই দিওয়ালি উৎসব হল শান্তি, সৌভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসার প্রতীক।'