বাংলাদেশি হিন্দুরা যাতে শান্তিতে এবং নির্বিঘ্নে দুর্গাপুজো তথা শারদোৎসব পালন করতে পারেন, তার জন্য সেদেশের প্রশাসন যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে বলেই আশা করছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
শুক্রবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রকের তরফ থেকে এই বার্তা দিয়েছেন তাদের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। একইসঙ্গে তিনি জানান, একাধিক ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘুদের নিয়ে ভারত সরকার অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
এরপরই রণধীর বলেন, ভারত সরকার আশা করছে, বাংলাদেশ প্রশাসন সেদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এমনকী, এই বিষয়টি সর্বোচ্চ স্তরেও উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রণধীর।
প্রসঙ্গত, মহালয়া পার হয়ে গিয়েছে। এপার বাংলার মতো ওপার বাংলাতেও হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দুর্গাপুজো করেন। কিন্তু, গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর সময় অশান্তি ছড়াচ্ছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দুর্গাপুজো চলাকালীন এবং তার আগে ও পরে পুজো মণ্ডপে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, এমনকী সংখ্যালঘু হিন্দুদের খুন করার মতো ঘটনাও ঘটেছে। যা নিয়ে বরাবর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভারত সরকার।
শুক্রবারের সাংবাদিক সম্মেলনে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, 'দুর্গাপুজোর সময় যদি কোনও (অনভিপ্রেত) ঘটনা ঘটে, তাহলে সেটা ভালো কথা নয়।' তিনি আরও বলেন, 'দুর্গাপুজো সবসময়েই শুভ বার্তা বয়ে আনে এবং এই উৎসব উপলক্ষে আমি সকলকে আমার শুভ কামনা জানাচ্ছি।'
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পালাবদলের জেরে হিন্দু-সহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা বেড়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
এই আবহে নিরাপত্তার অভাবে হিন্দুদের তরফ থেকে গণহারে পুজো বাতিল করার খবরও সামনে এসেছে। তার প্রেক্ষিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের এদিনের মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি করলেও দুর্গাপুজোর মুখে খুলনা-সহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিক মন্দিরে হুমকি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ, সেইসব চিঠিতে প্রেরকের নাম পাওয়া যায়নি। তবে, সব চিঠির বয়ানই মোটামুটি এক। সেগুলিতে হুমকি দেওয়া হয়েছে, দুর্গাপুজো যদি পালন করতেই হয়,তাহলে ৫ লক্ষ টাকা (বাংলাদেশি মুদ্রা) 'কর' দিতে হবে। অন্যথায় চরম ফল ভোগ করতে হবে!
বাংলাদেশের বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের নেতাদের মধ্য়ে অন্যতম শেখরচন্দ্র গোলদার জানিয়েছেন, এমন ভয়ের পরিবেশে তাঁরা হয়তো এবছর আর দুর্গাপুজো করবেন না।
কোনও কোনও হিন্দু আবার এহেন হুমকির প্রতিবাদে দুর্গাপুজো চলাকালীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গানবাজনা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।