বিগত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা বেড়েছে। এই আবহে সম্প্রতি ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি ঢাকায় গিয়ে সচিব পর্যায়ের বৈঠক করে এসেছেন। আর আজ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন করেন হায়দরাবাদের সাংসদ তথা এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। আর তাঁর প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ নিয়ে ভারত সরকারের উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরেন জয়শংকর। (আরও পড়ুন: বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাংলাদেশিদের খোঁজ পুলিশের! একদিনেই চিহ্নিত ২০ অনুপ্রবেশকারী)
আরও পড়ুন: হাতছাড়া হবে ফেনি? কলকাতা দখলের ডাক দেওয়া বাংলাদেশ এখন নিজেই আতঙ্কে কাঁপছে!
আজ বাংলাদেশ নিয়ে লোকসভায় এস জয়শংকর বলেন, 'বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে যা হচ্ছে, তা আমাদের কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের ওপর হামলার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। আমরা আমাদের উদ্বেগ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সম্প্রতি ভারতের বিদেশ সচিব ঢাকা সফর করেন। তাঁর বৈঠকে এই বিষয়টি উঠে এসেছে। আমরা আশা করছি যে বাংলাদেশ তাদের নিজস্ব স্বার্থেই ব্যবস্থা নেবে যাতে সেখানকার সংখ্যালঘুরা নিরাপদে থাকে।' (আরও পড়ুন: ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কতটা জানেন? কী হাল পাকিস্তানের?)
আরও পড়ুন: সেন্ট মার্টিনের ঘুম উড়িয়েছে আরাকান আর্মি, বাংলাদেশে বাড়বে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ?
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠে আসছে। হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই মন্দির থেকে শুরু করে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চলেছে। সেই সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা থেকে বিএনপি-জামাত দেখেছিল 'আওয়ামি লিগের ষড়যন্ত্র'। তবে কয়েক মাস যাওয়র পর সেই দেশে হিন্দুদের অবস্থা যেন আরও খারাপ। ধর্মের নামে চাকরি থেকে জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। অনেককে ধর্মান্তরিত করানোর অভিযোগও উঠেছে। এরই মাঝে চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যালঘু অত্যাচারে সেখানে অভিযুক্ত খোদ সেনা। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতারি ঘিরে আরও উত্তাল হয় পরিস্থিতি। এদিকে সেখানে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা পথে নেমেছে। 'জুলাই বিল্পবের' ছাত্র নেতারাও ইসকনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সারজিস আলম চট্টগ্রামে ইসকন এবং হিন্দুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছেন সম্প্রতি। এই আবহে ভারতের রাস্তাতেও লোক নেমেছে। বাংলাদেশি মৌলবাদে বিরুদ্ধে স্লোগান উঠেছে এখানে। ভারত সরকারও একাধিক বিবৃতি প্রকাশ করে ওপারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে 'কুকুর' আখ্যা দিলীপ ঘোষের! বললেন - 'ভিখিরিদের আশ্রয় ফুটপাতে')
আরও পড়ুন: 'বাংলাদেশি পাগল... লুঙ্গির পিছনে আগুন', আরাকান আর্মি নিয়ে বিস্ফোরক তথাগত
এদিকে শুধু বাংলাদেশ নয়, মায়ানমারের অস্থির পরিস্থিতি এবং নেপালের নোটে ভারতের অংশকে নিজেদের অংশ হিসেবে দেখানোর ইস্যুতেও ওয়াইসি প্রশ্ন করেন আজ। এই আবহে মায়ানমার নিয়ে জয়শংকর বলেন, 'মায়ানমারের খুব অস্থির অবস্থার কারণে, আমাদের উন্মুক্ত শাসন নীতি পর্যালোচনা করতে হয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে এই নীতি ছিল। কিন্তু সীমান্তে বসবাসকারীদের প্রয়োজনের প্রতিও সংবেদনশীল থাকতে হবে আমাদের। তাই এই নিয়ে এখনও আমরা কাজ করে চলেছি।'
আর নেপালের নোট ইস্যুতে বিদেশমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, ভারত নিজেদের অবস্থানেই অনড় আছে। তিনি বলেন, 'সীমান্ত নিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম। তাই আমাদের প্রতিবেশীরা কিছু করলে তাতে যে আমাদের অবস্থান বদলাবে, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। আমার এই অবস্থানের সঙ্গে গোটা লোকসভা সহমত হবে বলেই আমি মনে করি।'