সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল ফেলে দিয়েছেন রাশেল কৌর। ‘এয়ার এশিয়া’র ফিনান্স অপরেশনস ডিপার্টমেন্টের অ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার রাশেল কৌর সপ্তাহে ৫ দিন মালয়েশিয়ার বুকে ‘ডেইলি প্যাসেঞ্জারি’ করেন। সপ্তাহে ৫ দিন সকালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে গিয়ে সন্ধ্যায় পেনাং-র বাড়ি ফিরে আসা, এই রুটিনে জীবন চলে দুই সন্তানের মা রাশেলের। একদিকে, অফিস, একদিকে চাকরি, দুই দিন সামাল দিতে এমনই জীবনযাপন বেছে নিয়েছেন রাশেল।
রাশেলের আকাশপথে ‘ডেইলি প্যাসেঞ্জারি’ জীবন:-
সদ্য ‘সিএনএ ইনসাইডার’কে এক সাক্ষাৎকারে রাশেল তাঁর মালয়েশিয়ার পেনাং থেকে কোয়ালালামপুর পর্যন্ত সপ্তাহে ৫ দিন ‘নিত্যযাত্রা’র বিষয়টি জানিয়েছেন। মালয়েশিয়ায় নিবাসী ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাশেল কৌর পেনাং থেকে রোজ যান কুয়ালালামপুর। এটি প্রায় ৩৫০ কিলোমিটারের রাস্তা। গাড়ি, বা ট্রেনে তো নয়ই, নিত্যদিন বিমানে চড়ে চলে রাশেলের ‘ডেইলি প্যাসেঞ্জারি’ জীবন। তিনি ওই সাক্ষাৎকারে বলেন,' আমার ২ টি সন্তান আছে। আর তারা বড় হচ্ছে। বড়জন ১২ বছরের, আর ছোট মেয়ে ১১ বছরের। তারা যখন বড় হচ্ছে, তখন মনে হচ্ছে, তাদের আশপাশে মায়ের থাকাটা জরুরি। আর এই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমি বাড়িতেও প্রতিদিন থাকতে পারি, আর রাতে তাদের দেখতেও পারি।' এর আগে মালয়েশিয়ার কোয়ালালামপুরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন রাশেল। আর সপ্তাহে একদিনের জন্য পেনাং-এ এসে থাকতেন। বাড়িতে যেখানে সন্তান রয়েছে, সেখানে ওই ব্যবস্থাপনায় রাশেলের চাকরি আর ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব পড়ছিল। তারপর ২০২৪ সালের প্রথমের দিক থেকে তিনি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর পর্যন্ত ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করার সিদ্ধান্ত নিলেন। সাক্ষাৎকারে রাশেলের দাবি, অন্যন্য ব্যবস্থাপনার থেকে বর্তমান ব্যবস্থাপনায় তাঁর খরচও কম হচ্ছে, আর বাচ্চাদের তিনি দেখতেও পারছেন।
রাশেলের রুটিন:-
আকাশপথে বিমানে 'ডেইলি প্যাসেঞ্জারি', শুনতে অবাক লাগলেও, এই জীবনযাপন মোটেও সহজ নয়। রাশেল কৌর জানাচ্ছেন, তিনি ভোর ৪ টেয় ওঠেন রোজ। বিমানবন্দর পৌঁছতে রওনা হন ভোর ৫ টায়। ভোর ৫.৫৫ মিনিটের ফ্লাইট ধরেন রাশেল। মালয়েশিয়া পৌঁছে অফিসে ঢুকে যান ৭.৪৫ মিনিটের মধ্যে। সারাদিনের কাজের শেষ তিনি বাড়ি পৌঁছে যান রাত ৮ টার মধ্যে। তিনি ওই সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, মালয়েশিয়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে যা খরচ, তার থেকে কম খরচ রোজের এই সফরে। খরচের মধ্যে খাওয়া দাওয়া, যাতায়াত ধরেও তা কম পড়ছে বলে দাবি রাশেলের। তিনি বলছেন, আগে তাঁর মাসে ৪২ হাজার টাকা খরচ হত, এখন এই নয়া ব্যবস্থায় তাঁর খরচ হয় মাসে ২৮ হাজার টাকা। এদিকে, বিমানে সফরকালে তিনি ‘ Me Time' ও পেয়ে যান। বিমানে সফরকালে গান শোনেন। আবার বিমানবন্দরে নেমে তিনি অফিস পর্যন্ত হেঁটে যান। যা ৫ থেকে ৭ মিনিট লাগে। ফলে তাঁর হাঁটাও হয়। কেন ওয়ার্ক ফ্রম হোম নিচ্ছেন না রাশেল? রাশেলের উত্তর,' আশপাশে কয়েকজন থাকলে.. কাজ করতে সুবিধা হয়।'