বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > কিছু করতে হয় না! তাও ঘণ্টায় ৫,০০০ টাকা পান এই যুবক, আপনিও সেই চাকরি করবেন?

কিছু করতে হয় না! তাও ঘণ্টায় ৫,০০০ টাকা পান এই যুবক, আপনিও সেই চাকরি করবেন?

টোকিওর ব্যস্ত রাস্তায় শোজি। ছবি: রয়টার্স (REUTERS/Kim Kyung-Hoon)

'আমি নিজেকে ভাড়া দিই। আমার কাজ বলতে, আমার গ্রাহকরা যেখানে সঙ্গে যেতে বলছে, সেখানে যাওয়া। একজন সঙ্গী হিসাবে পাশে থাকা। আর কিছু নয়,' জানালেন শোজি মরিমোতো। কিন্তু তাঁকে কেন এত টাকা দিয়ে সবাই ভাড়া করেন? জানুন তাঁর কাহিনী। 

মোটা বেতন পাবেন। কিন্তু কাজ কিছুই করতে হবে না। সেটাই আপনার 'কাজ'। ভাবছেন এ আবার কী? আসলে এমনই 'পেশা' টোকিয়োর শোজি মরিমোতো নামের এক যুবকের। প্রায় কিছুই না করার জন্য পারিশ্রমিক পান তিনি। কীভাবে?

৩৮ বছরের শোজির কাজ হল 'সঙ্গী' হওয়া। ব্যাপারটা একটু খোলসা করা যাক। ধরুন কোনও ধনী ব্যবসায়ী বা আধিকারিক কোনও গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যাবেন। অথবা ধরুন শপিংয়ে যাবেন। কিন্তু সেখানে কোনও বন্ধু নেই নিয়ে যাওয়ার মতো। তাছাড়া অফিস, ব্যবসার জায়গায় বন্ধুও নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু সঙ্গে কেউ একটা থাকলে বেশ প্রভাবশালী লাগে। তাছাড়া শপিং, ডিনার, কেনাকাটার সময়ে সঙ্গে কেউ একটা থাকলেও সুবিধা লাগে। বোরিং লাগে না। সেই কারণেই শোজিকে ভাড়া করেন তাঁরা।

বিষয়টা আরও ব্যাখ্যা করলেন তিনি। তাঁর কথায়, 'সহজ ভাষায়, আমি নিজেকে ভাড়া দিই। আমার কাজ বলতে, আমার গ্রাহকরা যেখানে সঙ্গে যেতে বলছে, সেখানে যাওয়া। একজন সঙ্গী হিসাবে পাশে থাকা। আর কিছু নয়।' 

হয় তো মনে করছেন যে এভাবে আর কত টাকা করা সম্ভব! আর সেখানেই চমক। এভাবে ঘণ্টা পিছু ১০ হাজার ইয়েন চার্জ করেন শোজি। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৫,৬২২ টাকা। অর্থাত্, সারাদিন একটুও কাজ না করেই মোটা টাকা আয় করেন তিনি।

গত ৪ বছর ধরে এটাই পেশা তাঁর। ইতিমধ্যেই ৪,০০০টি 'সেশন' সেরে ফেলেছেন শোজি। তাহলেই ভাবুন, ঠিক কত টাকা আয় করে ফেলেছেন, কিছু না করেই! যদি তাঁর ঘণ্টা প্রতি আয় দিয়ে তা গুণ করা হয়, তা হলে গত চার বছরে তাঁর মোট আয়ের অঙ্ক দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। \

ফাইল ছবি: রয়টার্স
ফাইল ছবি: রয়টার্স (REUTERS)

শোজি জানান, গ্রাহকরা তাঁর 'পরিষেবা'য় বেশ সন্তুষ্ট। প্রতি ৪ জনের মধ্যেই ১ জন গ্রাহক তাঁর নিয়মিত 'কাস্টমার' হয়ে গিয়েছেন। এর মধ্যে এক ব্যক্তির তাঁর সঙ্গ এত পছন্দ হয়েছে যে, প্রায় ২৭০ বারেরও বেশি বুক করেছেন।

ঠিক কেমন ব্যক্তিরা আপনাকে বুক করেন? প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, নানা রকম গ্রাহক আছেন। প্রত্যেকের চাহিদা আলাদা। একবার একজন পার্কে ঢেঁকি চড়ার সঙ্গী চাই বলে বুক করেছিলেন। আবার কখনও কোনও অচেনা ব্যক্তি তাঁকে বুক করেছেন 'সি অফ' করার জন্য। তিনি ট্রেনে করে শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শহরে তাঁকে বিদায় জানানোর কেউ নেই। শোজি-কে তিনি বুক করেছিলেন স্টেশনে এসে ট্রেনের জানলা দিয়ে হাত নেড়ে বিদায় জানানোর জন্য। আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়া কি আমাদের আরও একা করে দিচ্ছে?

তবে এর মানে এই নয় যে তাঁকে যা-ই করতে বলা হবে তা করবেন। শোজি জানান, একবার এক ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে ফ্রিজ সরাতে সাহায্য করতে বলেছিলেন। সেটা করেননি। আবার একজন বেড়াতে যাওয়ার সঙ্গী হিসাবে সঙ্গে কম্বোডিয়া যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এর পাশাপাশি, কোনও যৌন আবদারও মেটান না। তিনি একজন সঙ্গী মাত্র। যৌনকর্মী নন।

গত সপ্তাহে শোজির গ্রাহক ছিলেন অরুণা চিদা নামের এক যুবতী। বছর ২৭ বয়স। ডেটা বিশ্লেষকের পদে ভাল চাকরি করেন। আর শাড়ি পরতে ভালবাসেন। তিনি শোজি-কে বুক করেছিলেন তাঁর সঙ্গে কফি শপে বসে চা আর কেক খাওয়ার জন্য। মজার বিষয় হল, শোজির সঙ্গে বিশেষ কথাও বলেননি। হালকা গোলাপি শাড়ি, গয়না। আইস টি-টা সামনে রেখে চুপচাপ ফোন ঘাঁটছিলেন তিনি। একইভাবে উল্টো দিকে বসে নিজের মতো ফোন ঘাঁটছিলেন শোজি।

কিন্তু কেন? অরুণা জানান, তিনি শাড়ি পরতে পছন্দ করেন। কিন্তু বন্ধুরা যদি তাঁর শাড়ি নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করেন? সেই ভয় থেকেই শোজিকে বুক করেছিলেন তিনি। অরুণা আরও জানান, পরিচিত কেউ হলে তাঁকে সারাক্ষণ খাতির করতে হয়। কিন্তু ভাড়া করা কারও জন্য এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না। কথা বলতে ইচ্ছা না করলেও সে কিছুই মনে করবে না।

ফোন ঘাঁটছেন দু'জনেই। ছবি: রয়টার্স
ফোন ঘাঁটছেন দু'জনেই। ছবি: রয়টার্স (REUTERS)

আসলে আমরা সকলেই একজন শোজি মরিমোতোর মতো কাউকেই খুঁজি। এমন কেউ, যে আমাদের পোশাক, পেশা, সামাজিক অবস্থান, হবি, পরিবার, রূপের ভিত্তিতে বিচার করবে না। এমন কেউ, যাঁর সঙ্গে নির্দ্বিধায় কাটানো যাবে কিছুটা সময়। তার সঙ্গে দেখা করার জন্য আলাদা করে নিজেকে তৈরি করতে হবে না। কারণ এই আপাত সাদামাটা, ছিপছিপে চেহারার যুবকের পেশাই আপনাকে সঙ্গে দেওয়া।

সহচর্যের এই পেশাই এখন মরিমোটোর একমাত্র আয়ের উৎস। এই দিয়েই তিনি তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের ভরণপোষণ করেন। দিনে এক বা দুইজন ক্লায়েন্টের সঙ্গে দেখা করেন। মহামারীর আগে যদিও, দিনে তিন-চারজনের সঙ্গে দেখা করতে হত।

'লোকের কাছে আমার কিছুই না করাটাই অনেক বেশি মূল্যবান। আর সবাইকে যে কিছু করতেই হবে, এমন কোনও মানে নেই,' বলেন শোজি।

সহচর্যের এই পেশা কি একবিংশ শতাব্দীর একাকীত্বের ফল, নাকি নিছকই এক ব্যতিক্রমী কাজ? আপনার কী মনে হয়? আপনার সুযোগ থাকলে ভাড়া করতেন শোজির মতো কাউকে?

ঘরে বাইরে খবর

Latest News

RR vs DC: পন্তের হাত ধরে ডিআরএস নিতে বাধ্য করলেন কুলদীপ, আউট হলেন বাটলার- ভিডিয়ো শিবসেনায় যোগ দিয়েই একনাথের গুণগান গোবিন্দার, লোকসভায় লড়ছেন নাকি? ‘সাপখোপ বিশেষ…’, উলুপি একা নয়, সৃজিতের মোট ৪টি বল পাইথন আছে, জানালেন মিথিলা রিল লাইফ পুত্রবধূকেই বউমা করতে চান নন্দিনী! শাশুড়ির প্রশংসায় অরুণিমা বললেন কী? RR vs DC: রিয়ান ঝড়ের পর, শেষ ওভারে আবেশের বাজিমাত, পরপর দুই ম্যাচে হার দিল্লির দেশের সবচেয়ে ধনী মহিলা সাবিত্রী জিন্দাল যোগ দিলেন BJPতে, ছাড়লেন কংগ্রেস টলিউডে অসফল, সেটারই প্রতিশোধ রাজনীতির ময়দানে নিচ্ছেন হিরণ! দাবি দেবের 'অডিশন না নিয়েই বাদ দিয়েছে...' অভিনেত্রী হতে কী কী সহ্য করেছেন আরত্রিকা? প্রসূণের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ খগেনের, নির্বাচন কমিশনে নালিশ ঠুকল তৃণমূল শনি থেকে ঝেঁপে বৃষ্টি? শুক্রে কেমন থাকবে বাংলার আবহাওয়া? রইল পূর্বাভাস

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.