উৎপল পরাশর
অরুণাচলের মুখ্য়মন্ত্রী পেমা খান্ডু শুক্রবার জানিয়েছেন, তিব্বতের ইয়ারলাং সাংপো নদীতে বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিন। ৬০,০০০ মেগাওয়াটের মেগা ড্যাম। এর জেরে ভারত ও বাংলাদেশের প্রচুর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
অরুণাচলের মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়েছেন, এটাকে ওরা কার্যত ওয়াটার বোম্ব হিসােব ব্যবহার করতে পারে। খুলে দিলেই বিশাল বিপর্যয় হবে নিম্ন অববাহিকায়। এই ইয়ারলাং সাংপো অরুণাচলে সিয়াং নামে পরিচিত। সেটা যখন অসমে গিয়েছে তখন ব্রহ্মপুত্র। আবার এটা বাংলাদেশের মধ্য়ে দিয়ে গিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।
ইটানগরে পরিবেশ ও সুরক্ষা বিষয়ক একটি সেমিনারের সাইডলাইনে অরুণাচলের মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়েছেন, জল সুরক্ষা, বাস্তুতন্ত্রের ক্ষেত্রে বড় প্রভাব পড়েত পারে। অরুণাচল, অসম, বাংলাদেশের প্রচুর মানুষের জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে এবার বিরাট ঝুঁকি চিনের এই বাঁধ । জলের প্রবাহে হেরফের হতে পারে, ইকো সিস্টেম ভেঙে যাবে, সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে আমাদের উপর।
তিনি জানিয়েছেন, নিম্ন অববাহিকায় কখন কতটা জল যাবে সবটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে চিন। এটা ভয়াবহ হতে পারে। খরা হতে পারে এর জেরে। শীতকালের দিকে জল পুরো শুকিয়ে যেতে পারে সিয়াং নদীতে।
আবার উলটো দিকে আচমকা জল ছাড়লে পুরো ভেসে যাবে। বিশেষত বর্ষার সময়। ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। এমনকী কৃষি জমি যে পলির উপর নির্ভর করে সেখানেও তারতম্য হয়ে যাবে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যদি চিন এটাকে ওয়াটার বোম্ব হিসাবে ব্যবহার করে, এটা আদি ট্রাইবদের উপর বিরাট প্রভাব ফেলবে। অসমের পাশাপাশি বাংলাদেশের কাছেও এটা উদ্বেগের।
তিনি জানিয়েছেন, চিনের বাঁধ নিয়ে এই উদ্বেগের কারণে ভারত সরকার সিয়াং আপার মাল্টিপারপাস প্রকল্প তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে।
এই প্রকল্পের একটা জাতীয় গুরুত্ব রয়েছে। আমি মানুষের সঙ্গে এনিয়ে কথা বলব। আমাদের জল সুরক্ষা বজায় রাখার জন্য এটা দরকার। যদি চিন আগামী দিনে এটাকে জল বোমা হিসাবে ব্যবহার করতে চায় তবে আমরা প্রতিরক্ষার জন্য তৈরি থাকব।
এদিকে সিয়াং নদীতে এই প্রকল্প নিয়ে স্থানীয়দের একাংশের কিছু আপত্তি রয়েছে। কারণ তাঁদের মতে, এই ধরনের প্রকল্প হলে তাঁদের বাস্তুচ্যুত হতে হবে। তিনি বলেন, ভারতের একাধিক নদী তিব্বতের উপত্যকা থেকে বেরিয়েছে। আর চিন বার বার এই প্রাকৃতিক সম্পদকে নষ্ট করছে।
তিনি বলেন, তিব্বতকে এশিয়ার ওয়াটার টাওয়ার বলা হয়। এই অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ মানুষকে জল সরবরাহ করে।