মুকুল সাংমা। মেঘালয়ের রাজনীতিতে একটা পরিচিত নাম। একদা মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তারপর পরিস্থিতির পরিবর্তনে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের পাঁচটি আসন রয়েছে। অর্থাৎ জিতেছে। এবার মেঘালয় বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার মর্যাদা পেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুকুল সাংমা। আজ, বৃহস্পতিবার মেঘালয় বিধানসভার সচিবালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এখানে কংগ্রেসের একটি বিধায়ক। কংগ্রেস বিধায়কের নাম রনি ভি লিংডো। তাঁর সমর্থন নিয়ে উত্তর–পূর্বের পাহাড়ি রাজ্যের সংসদীয় রাজনীতিতে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। মেঘালয়ের ক্ষমতায় রয়েছে এনডিএ। সেখানে দু’জন বিজেপি বিধায়ক আছেন। ‘ন্যাশনাল পিপলস পার্টি’ এখানে শাসকদল।
এই ঘটনার পরই জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে চিত্র পাল্টে গিয়েছে। ইন্ডিয়া জোটে কংগ্রেস আছে। তার সঙ্গে আছে তৃণমূলও। এবার মেঘালয়ে কার্যত জোট তৈরি হল। সুতরাং মেঘালয়ে এবার কংগ্রেস–তৃণমূল একসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইতে নামবে। এই ঘটনার পর আজ, বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে মুকুল সাংমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুল মেঘালয়ের রাজনীতিতে দক্ষ ব্যক্তিত্ব। কংগ্রেসের হয়ে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলেছেন। ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন মুকুল সাংমা।
বাংলায় একুশের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই সাংগঠনিক রদবদল করেন। তখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যুব সংগঠন থেকে সরিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করা হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর অভিষেকের লক্ষ্য ছিল, বাংলার বাইরে একাধিক ছোট রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসকে প্রতিষ্ঠা করা। তাই গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়ের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃণমূল কংগ্রেস। গোয়া ও ত্রিপুরায় সেভাবে সাফল্য না এলেও মেঘালয়ে পাঁচটি আসনে জয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: মহিলা কনস্টেবলের হাতে কামড় বসিয়ে দিলেন বিজেপি নেত্রী, তুঙ্গে উঠেছে আলোড়ন
এবার সেখানে প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমা হন। মেঘালয় বিধানসভায় মোট আসন ৬০। নিয়ম অনুযায়ী, বিরোধী দলনেতার মর্যাদা পেতে গেলে ১০ ভাগের এক ভাগ আসন পেতে হয়। অর্থাৎ ৬টি আসন। পাঁচটি আসন ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। দরকার ছিল আর একটি। তৃণমূলকে এখানে সমর্থন করেন কংগ্রেসের লিংডো। তখন ৬টি আসন হয়ে যায়। বুধবার মেঘালয় বিধানসভার স্পিকারের সঙ্গে দেখা করে বিরোধী দলনেতা পদের দাবি করেন মুকুল ও লিংডো। সূত্রের খবর, লিংডো হবেন মেঘালয় বিধানসভায় বিরোধী শিবিরের মুখ্যসচেতক। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আজ এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘মেঘালয় বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমাকে অভিনন্দন। তাঁর দৃঢ় প্রচেষ্টা রাজ্যের উন্নতিকে শক্তিশালী করবে। মানুষের জীবনে পরিবর্তন আসবে। বিস্তর অভিজ্ঞতা থাকার দরুণ আমি নিশ্চিত মেঘালয়ের মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য মুকুল তাঁর স্বর তুলবেন। এই রাজ্যের গর্ব ও ঐতিহ্য ফিরে আসবে।’