ওয়ার্ক ফ্রম হোম নামেই, বিশ্ব ঘুরে ঘুরে কাজ করতে ১২ বছরের জন্য এক ক্রুজ জাহাজে ফ্ল্যাট লিজ নিলেন মেটা-র এক ২৮ বছর বয়সি কর্মী। করোনা অতিমারির সূচনার পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুরু হয় ওয়ার্ক ফ্রম হোমের রীতি। মূলত আইটি ফার্মগুলির মধ্যেই এই বিষয়টি বেশি লক্ষ্য করা গিয়েছে। এখনও অনেক সংস্থাতেই ওয়ার্ক ফ্রম হোম নীতি জারি রয়েছে। এদিকে কাজ বাড়ি থেকে হোক কি পাহাড় বা সমুদ্র উপকূল, তাতে কোনও বেশি ফারাক পড়ে না। এই আবহে অনেকেই বাড়ি থেকে কাজ করার বদলে ঘুরতে ঘুরতে কাজ করেছেন। তবে একবারে ১২ বছরের জন্য ক্রুজে ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়ার মতো ঘটনা এর আগে সামনে আসেনি কোথাও।
জানা গিয়েছে, ১২ বছরের জন্য ক্রুজে ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া মেটা কর্মীর নাম অস্টিন ওয়েলস। 'এমভি ন্যারেটিভ' নামক বিশাল এক ক্রুজ জাহাজে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন অস্টিন। এই ক্রুজে মোট ৫০০টি এই ধরনের ফ্ল্যাট রয়েছে। অস্টিন মেটার 'রিয়েলিটি ল্যাবে' কাজ করেন। চাকরির ফাঁকে ফাঁকে নয়, বরং চাকরি করতে করতেই নিত্য নতুন জায়গা দেখার তাগিদেই এই ধরনের পদক্ষেপ অস্টিনের। এই ফ্ল্যাট ১২ বছরের জন্য ভাড়া নেওয়ার জন্য অস্টিনের খরচ হয়েছে ৩ লাখ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রার নিরিখে যা ২.৪ কোটি টাকার সমান। সংবাদ সংস্থা সিএনবিসিকে এক ভিডিয়ো কলে অস্টিন বলেন, 'আগে মানুষ কোথাও ঘুরতে যেতে চাইলে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে, ব্যাগ গুছিয়ে, বিমানে চড়ে, রুম ভাড়া করত। এখন আমার মডেলে, কাজ করার পাশাপাশি নিজের ফ্ল্যাটে থাকা যাবে, ডাক্তার দেখানো যাবে, জিমে যাওয়া যাবে।'
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে বিশ্ব জুড়ে কোভিড ঝড় আছড়ে পড়তেই অফিস বন্ধ করতে বন্ধ হয়েছিল ছোট থেকে বড় সব ধরনের সংস্থা। প্রায় গোটা বিশ্বেই লকডাউন জারি হয়েছিল। স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল প্রায় সব দেশ। তবে আইটি সেক্টরের সংস্থাগুলির কাজে সেই অর্থে ব্যাঘাত ঘটেনি। ওয়ার্ক ফ্রম হোমের দৌলতে অনেকেরই সুবিধা হয়েছে। এরকম অনেকেই ছিলেন, যাঁরা চাকরির তাগিদে নিজের বাড়ি, শহর এমনকী দেশ ছেড়ে ভিনদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। ওয়ার্ক ফ্রম হোমের কারণে এই ধরনের কর্মীরা নিজের বাড়িতে ফিরতে পেরেছিলেন। অনেক ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকা ছেড়ে দেশে ফিরে কাজ চালিয়ে গিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর অবশ্য অফিস খুলেছে। ফিরে গিয়েছেন অনেকেই। তবে এখনও মেটার মতো অনেক সংস্থা বাড়ি থেকে কাজ করার স্বাধীনতা দিচ্ছে কর্মীদের। এই সুযোগে অনেকেই ঘুরতে ঘুরতে কাজ করছেন। উপার্জনের পাশাপাশি নিজের স্বপ্ন পূরণ করছেন। নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করছেন। অস্টিন ওয়েলস সেই শ্রেণির ভ্রমণ পিপাসুদেরই একজন।