'আমরা কাতার এসেছিলাম উপার্জন করতে, পরিবারকে একটু ভাল রাখতে। কিন্তু সংস্থা এবং কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে,' বলার সময়ে গলা ধরে আসছিল এক প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষীর। 'খুব অসহায় লাগে,' সাংবাদিকের চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন তিনি। আরও পড়ুন: Egra Blast: এগরা বিস্ফোরণ,পুলিশের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, জানতে চাইল মানবাধিকার কমিশন
কাতারে অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপের পর প্রায় পাঁচ মাস কেটে গিয়েছে। মেসির কাপে চুম্বনের ছবি এখন অতীত। আধুনিক বিশ্বের অন্যতম বড়, আন্তর্জাতিক ইভেন্ট বেশ সফল হয়েছে। কিন্তু, হাজার হাজার শ্রমিকের এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার কাহিনী যেন সেই চাকচিক্যের আড়ালেই থেকে গিয়েছে। তাঁদের পরিশ্রম, লড়াইয়ের কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ক্ষেত্রে ভাইরাল হয়েছে।
তবে এখনও কাতারে অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন। এমনই আটকে রয়েছেন বিশ্বকাপের তিন নিরাপত্তারক্ষী। দ্য গার্ডিয়ানের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের শাকির উল্লাহ এবং জাফর ইকবাল, এবং এক ভারতীয় সেখানে ছয় মাসের কারাদণ্ডে আটকে রয়েছেন। শুধু তাই নয়, তাঁদের প্রত্যেককে ১০,০০০ রিয়াল (প্রায় ২,২০,০০০ টাকা) জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু মানবাধিকার সংস্থা ইকুইডেম এবং দ্য গার্ডিয়ান-এর এই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কাতার সরকার কোনও মন্তব্য করেনি।
টুর্নামেন্ট চলাকালীন টুরিস্টবহুল স্থানের তদারকি করার জন্য স্থানীয় প্রাইভেট সিকিউরিটি ফার্ম স্টার্ক সিকিউরিটি সার্ভিসেস এই তিন ব্যক্তিকে নিয়োগ করেছিল। কিন্তু, তাদের কর্মসংস্থানের চুক্তি বেশ কয়েক মাস বাকি থাকা সত্ত্বেও, তাঁদের ফাইনাল ম্যাচের পরেই বরখাস্ত করে দেওয়া হয়েছিল।
মানবাধিকার সংগঠন ইকুইডেম অবিলম্বে এই আটক অভিবাসী শ্রমিকদের মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। ইকুইডেমের পরিচালক মোস্তফা কাদরি হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, 'যাঁরা ফিফাকে এই বিপুল মুনাফা অর্জনে সাহায্য করেন, তাঁদের প্রতি ফিফার চূড়ান্ত অবহেলার ফল এটি।'
দ্য গার্ডিয়ান এমন আরও নয়জন কর্মীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তাঁদের প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, তাঁদের সবারই চুক্তি সময়ের আগেই খতম করে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনাগুলি থেকেই যেন বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে জড়িত বিদেশ থেকে আগত শ্রমিকদের কঠোর বাস্তবের ছবিটা আরও স্পষ্ট হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশে আটকে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের এই দুর্দশা থেকে একটি বিষয় নিশ্চিত। এই ধরনের আন্তর্জাতিক ইভেন্টে বাহ্যিক আড়ম্বরে ত্রুটি না থাকলেও, সাধারণ কর্মীদের মানবাধিকারের প্রতি দৃষ্টির অভাব রয়েছে। আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের ওপর বাড়ছে অত্যাচার, বলছে সেদেশেরই মানবাধিকার কমিশন
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup