গজরাজদের বাধা দেওয়া বলে কথা। তা কখনও সহ্য করা যায়। বিকল্প উপায় বলতে সেই বাধাকেই সরিয়ে দিতে হয়। আর হলও তাই। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে ভাঙা পড়তে চলেছে মিঠুন চক্রবর্তী–সহ একাধিক সেলিব্রিটি, নামী ব্যক্তির রিসর্ট৷ আর তা নিয়ে জোর চর্চা তুঙ্গে।
ঘটনাস্থল কোথায়? জানা গিয়েছে, তামিলনাড়ুর নীলগিরির পাহাড়ি অঞ্চলে তৈরি ওই রিসর্টগুলির কারণে হাতিদের চলাফেরা বাধা পেয়েছে৷ এলিফ্যান্ট করিডরের কাছেই রিসর্টগুলির অবস্থান হওয়ায় গজরাজরা স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছে না৷ তাই বুধবার রিসর্টগুলি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে এই একই ইস্যুতে মাদ্রাজ হাইকোর্টও রিসর্ট ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল৷ সেই নির্দেশেই অক্টোবর মাসে সিলমোহর দিল সর্বোচ্চ আদালতও৷
নীলগিরির পাহাড়ি অঞ্চলে মাদুমলাই ফরেস্টের সুরক্ষিত জায়গায় আইনি বিধি মেনেই রিসর্ট তৈরি করেছিলেন একাধিক জনপ্রিয় ব্যক্তি৷ তার মধ্যে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীরও একটি রিসর্ট রয়েছে৷ ওই এলাকার আশপাশ দিয়েই যাতায়াত করে হাতিরা৷ যার প্রভাব পড়ে ওই অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রে৷ এই বিষয়টি নজরে আনতেই ২০১১ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা৷ আর সেই মামলার শুনানিতেই পরিবেশ রক্ষার উদ্দেশ্যে মিঠুন চক্রবর্তীর রিসর্ট–সহ ওই এলাকায় গড়ে ওঠা সমস্ত হোটেলগুলিকেই ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় আদালত।
এরপর মাদ্রাজ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ে ৩২টি আবেদন।অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী নিজের আবেদনে আদালতকে জানান, তাঁর রিসর্ট থেকে ওই এলাকার বহু আদিবাসী মানুষ নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করেন। রিসর্ট ভাঙা পড়লে তারা রোজগার হারাবেন। আর ওখানে মানুষের জনসমাগমের কারণে চোরাশিকারদের হাত থেকেও হাতিদের বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি।
বরং ওই আবেদনের শুনানিতে সু্প্রিম কোর্ট মিঠুন চক্রবর্তীর আবেদন–সহ ৩২টি আবেদন খারিজ করে মাদ্রাজ হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখল৷ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, হাতিরা অত্যন্ত ভদ্র একটি প্রাণী। তাই মানুষেরও ভদ্রতাস্বরূপ তাদের রাস্তা ছেড়ে দেওয়া উচিত৷ ওই অঞ্চলকে ২০১০ সালের আগস্ট মাসে এলিফ্যান্ট করিডর বলে চিহ্নিত করে তামিলনাড়ু সরকার৷ তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে আদিবাসীদের বাড়ি ছাড়া বাকি রিসর্ট, হোটেল–সহ মোট ৮২১টি বিল্ডিং ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।