উৎপল পরাশর
অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে এবার বড় পদক্ষেপ নিল মিজোরাম সরকার। মিজোরাম সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্য দেশ থেকে অবৈধভাবে কেউ মিজোরামে প্রবেশ করলে তাদের জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হবে না। এমনকী বর্তমানে মায়ানমার থেকে অবৈধভাবে এসে যারা মিজোরামে রয়েছেন তাদের জন্যও এই ব্যবস্থাটি কার্যকরী হবে। বৃহস্পতিবার সরকারি তরফে এব্যাপারে জানানো হয়েছে।
এদিকে গত বছর মার্চ মাস থেকে একেবারে স্রোতের মতো মায়ানমার থেকে লোকজন মিজোরামে আসতে শুরু করেন। মায়ানমারে সামরিক অস্থিরতার জেরে তারা এভাবে দলে দলে আশ্রয় নেয় মিজোরামে। এদিকে সার্বিক পরিস্থিতিতে বর্তমানে অন্তত ৪০,০০০ অনুপ্রবেশকারী মিজোরামে থাকতে শুরু করেছেন। এবার সরকারি সিদ্ধান্তের জেরে তাদের সামনে কার্যত বড় ধাক্কা।
এদিকে সম্প্রতি কিছু বাংলাদেশি লোকজনও অবৈধভাবে মিজোরামে ঢুকে পড়েছেন বলে খবর।
এদিকে মিজোরামের ইকোনমিক্স ও স্ট্যাটিসটিক্স ডিপার্টমেন্ট মঙ্গলবার একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। সমস্ত জেলায় এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে অবৈধভাবে যে অনুপ্রবেশকারীরা ও শরনার্থীরা মিজোরামে ঢুকে পড়েছে তাদের জন্ম ও মৃত্যুর কোনও শংসাপত্র দেওয়া হবে না। এমনকী আগে এই ধরনের কাগজ দেওয়া হয়ে থাকলে তা বাতিল করে দিতে হবে।
মিজোরামের ডিপার্টমেন্ট অফ ইকোনমিক্স ও স্ট্যাটিসটিক্সের ডিরেক্টর বি লালরিনলুয়া জানিয়েছেন, গত বছর অক্টোবর মাসে ইন্টার ডিপার্টমেন্টাল কো অর্ডিনেশন কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যারা অন্য দেশ থেকে অবৈধভাবে মিজোরামে প্রবেশ করেছেন তাদের জন্ম ও মৃত্যুর কোনও শংসাপত্র দেওয়া যাবে না। এর সঙ্গেই তিনি উল্লেখ করেছেন, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী আইডিসিসির এই সিদ্ধান্তটি অনুমোদন করেছেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন যে, অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারীরা যাতে কোনওভাবেই নাগরিকত্বের দাবি করতে না পারেন সেকারণে এই বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানিয়েছেন, তারা রিফিইউজি। এনিয়ে আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে। আমরা তাদের খাবার ও আশ্রয় দিতে পারি। কিন্তু আমরা তাদের ভারতীয় বলে গণ্য করতে পারি না। আমরা যদি তাদের জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্র দিই তবে আগামী দিনে তারা নাগরিকত্ব দাবি করতে পারেন। মিজোরামের কল্যাণের জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তবে এখানেই প্রশ্ন উঠেছে তবে কি মিজোরামের মাটিতে কোনও অনুপ্রবেশকারীর সন্তান হলে তিনি স্টেটলেস চাইল্ড হিসাবে গণ্য হবেন? এনিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা চলছে পুরোদমে।