অত্যাচার করে পাকিস্তানে হত্যা করা হল শ্রীলঙ্কার এক ব্যক্তিকে। তারপর তাঁর দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। যিনি শিয়ালকোটের একটি কারখানার ম্যানেজার ছিলেন। সেই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
নাম গোপন রাখার শর্তে পাকিস্তান রাজধানী ইসলামাবাদের ২০০ কিলোমিটারের দূরে অবস্থিত শিয়ালকোটের এক পুলিশ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ধর্মদ্রোহের অভিযোগ তোলা হয়েছিল ওই শ্রীলঙ্কার নাগরিকের বিরুদ্ধে। পঞ্জাব প্রদেশের এক পুলিশ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি চরমপন্থী ইসলামিক দল তেহরিক-ই-লাব্বাইকের একটি পোস্টার ছিঁড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিযেছিলেন বলে অভিযোগ। সেই পোস্টারে কোরানের কোনও উদ্ধৃতি লেখা ছিল বলে দাবি করা হযেছে। সেই বিষয়টি নাকি কারখানার কয়েকজন কর্মীর চোখে পড়ে। তারাই কারখানার বাকি লোকজনদের সে বিষয়ে জানায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে যে একদল লোক একটি জায়গা ঘিরে আছেন। মাঝখান থেকে কালো ধোঁয়া উড়ছে। জ্বলছে আগুন। সামনের লোকজন কিছুটা সরে যেতে দেখা যায় যে কেউ একটা জ্বলছেন। পঞ্জাব প্রদেশের ওই পুলিশ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, ওই শ্রীলঙ্কার ব্যক্তিকে টেনে বের করা হয়। তাঁর উপর নৃশংসভাবে অত্যাচার চালানো হয়। এতটাই মারধর করা হয় যে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তারপর তাঁর দেহ পুড়িয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা।
যে ইসলামিক চরমপন্থী দলের বিরুদ্ধে সেই নৃশংসতার অভিযোগ উঠেছে, সেই দলের উপর থেকে সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ইমরানের সরকার। জেল থেকে ১,৫০০ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। যাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগ আছে। পরিবর্তে ফ্রান্সে কার্টুন নিয়ে ফরাসি দূতকে বহিষ্কার করার দাবি থেকে সরে এসেছে। যদিও শুক্রবারের নৃশংস ঘটনার নিন্দা করেছেন ইমরান। টুইটারে তিনি বলেছেন, ‘শিয়ালকোটের কারখানার নৃশংস আক্রমণ এবং শ্রীলঙ্কানকে ম্যানেজারকে হত্যার ঘটনা পাকিস্তানের জন্য লজ্জার দিন।তদন্তের উপর নজর রাখছি আমি।’ সেইসঙ্গে তিনি জানান, সকল দোষীকে আইনের চূড়ান্ত মাত্রায় শাস্তি দেওয়া হবে।' তারইমধ্যে প্রশাসনের এক ব্যক্তিকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ৫০ জনকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়েছে।