এবারের লোকসভা নির্বাচনে গত সরকারের ১৯ জন মন্ত্রী হেরেছেন। তাঁদের মধঅযে স্মৃতি ইরানি সহ ৪ জন ক্যাবিনেট ব়্যঙ্কের। এদিকে এবারের ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। সরকার টিকিয়ে রাখতে তাই জোটসঙ্গীদের ওপর নির্ভর করে থাকতেই হবে বিজেপিকে। এহেন পরিস্থিতিতে মন্ত্রীপদের দাবি নিয়ে চাপ বাড়াতে পারে টিডিপি এবং জেডিইউ-র মতো দলগুলি। সরকার বাঁচাতে সেই সব দাবির অধিকাংশ মেনে নিয়ে আপসও করতে পারে বিজেপি। আর তাই এবার মোদী ৩.০ সরকারের ক্যাবিনেটের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। (আরও পড়ুন: 'অতি লোভে তাঁতি নষ্ট', বড় রায় আদালতের, মাথায় হাত পড়তে পারে সরকারি কর্মীদের)
আরও পড়ুন: ছেলের হাতের মোয়া নাকি? আদালতের কড়া শর্তে চিন্তায় কর্মরত সরকারি কর্মীরা?
এবারের নির্বাচনে বাংলার চার মন্ত্রীর একজনকে প্রথমেই টিকিট দেওয়া হয়নি। আর লড়াই করে বাকি তিনজনের মধ্যে শুধুমাত্র ১ জন জয়ী হয়েছেন। বনগাঁ থেকে শান্তনু ঠাকুর জেতেন এবারের ভোটে। হেরেছেন সুভাষ সরকার এবং নিশীথ প্রামাণিক। এদিকে এবারের ভোটে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির সাইকেল রকেট গতিতে ছুটেছে। সমাজবাদীর চাকায় ছিন্নভিন্ন পদ্ম। ২০১৪ ও ২০১৯ সালে মোদীর জয়রথের চাকা যে উত্তরপ্রদেশ হয়ে দিল্লি ছুটেছিল, তাতে ব্রেক কষেছে ২০২৪-এর ফলাফল। আর এই উত্তরপ্রদেশ থেকে হেরেছেন স্মৃতি ইরানি সহ মোদী ২.০-র ৭ জন মন্ত্রী। জিতলেও ব্যবধান কমেছে রাজনাথ, মোদীর। (আরও পড়ুন: ৯৯ হলেও এখনও সেঞ্চুরি করতে পারে কংগ্রেস! জোটসঙ্গীদের হাত পুড়িয়েই বদল অঙ্কে?)
আরও পড়ুন: ইন্দিরার হত্যাকারীর ছেলে, জেলবন্দি খলিস্তানির জয় ভোটে, কোন পথে পঞ্জাবের রাজনীতি?
গতবার উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপি একাই ৬২টি আসন পেয়েছিল। এবার অবশ্য এই রাজ্যের সিংহভাগ আসন ঝুলিতে ভরেছে সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেস জোট। সমাজবাদী পার্টির সমর্থনে আমেঠি আসন পুনর্দখল করেছে কংগ্রেস। সেখানে সোনিয়া গান্ধী আপ্তসহায়ক কিশোরী লাল হারিয়ে দিয়েছেন স্মৃতি ইরানিকে। গতবার এই আসন থেকেই রাহুল গান্ধীকে হারিয়েছিলেন স্মৃতি। তবে এবার মোদী ২.০-র মন্ত্রী হেরেছেন ১.৬ লাখ ভোটে। এদিকে শুধু স্মৃতি নন, এবার উত্তরপ্রদেশ থেকে হেরেছেন মোদী ২.০-র আরও ৬ জন মন্ত্রী। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন অজয় মিশ্র টেনি। অমিত শাহের ডেপুটিকে নিয়ে এর আগেও বিতর্ক কম হয়নি। লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের গাড়ি চাপা দিয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত তাঁর ছেলে। যোগীর পুলিশই অজয়ের ছেলেকে গ্রেফতার করেছিল। তাও বিজেপি এবার অজয়কে টিকিট দিয়েছিল। তবে তিনি এবার হেরেছেন ৩৩ হাজার ভোটে। এছাড়া এবার উত্তরপ্রদেশের জালাউন থেকে হেরেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভানু সিং ভর্মা। চণ্ডৌলি থেকে মহেন্দ্রনথ পাণ্ডে, মুজফফরনগর থেকে সঞ্জীব বলিয়ান, মোহলগঞ্জ থেকে কৌশল কিশোর, ফতেহপুর থেকে সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতিও হেরেছেন এবারে। তিরুবনন্তপুরম থেকে শশী থারুরের মুখোমুখি হয়ে হেরেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। সব মিলিয়ে গোটা দেশে বিজেপির ১৯ জন মন্ত্রী হেরেছেন। (আরও পড়ুন: 'বাংলায় সংগঠন শুয়ে পড়েছে', পদ ছাড়াই দলের হাল ধরার বার্তা দিলীপ ঘোষের)
আরও পড়ুন: হারের পর ফোন আসেনি হাইকমান্ডের, নতুন বাড়ি খুঁজতে দিল্লি যাচ্ছেন অধীর
এদিকে গতবার মোদী ২.০ সরকারে সর্বোচ্চ ৮১ জন মন্ত্রী রাখা যেত। তবে সব মিলিয়ে মন্ত্রীর সংখ্যা ছিল ৭১। এছাড়া অনেক মন্ত্রককে মিশিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল। তবে নয়া সমীকরণে সেই সব কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি এবার হয়ত জোটসঙ্গীদের মন রাখতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মন্ত্রীকেই জায়গা করে দিতে হবে মোদীকে। এই আবহে মোদী ৩.০-র ক্যাবিনেটের চিত্র আগেরবারের তুলনায় পুরোপুরি বদলে যেতে পারে।