লোকসভায় ইতিমধ্যেই পাশ হয়েছে তিনটি কৃষি সম্পর্কিত বিল। এবার রাজ্যসভার পালা। সেখানে অবশ্য মোদী সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তাই বিলগুলিকে আটকাতে মরিয়া বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই বিজেপি শরিক অকালি মন্ত্রিসভা ছেড়েছে এই ইস্যুতে। আরেক শরিক হরিয়ানার জেজেপির ওপর বিরোধীরা চাপ বাড়াচ্ছে এই বিলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য।
বৃহস্পতিবার টুইটার বার্তার পর শুক্রবার ভিডিও বার্তায় এই তিনটি বিল নিয়ে চাষীদের বিভ্রান্ত না হতে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। এই বিল নিয়ে যে কোনও ভাবেই সরকার পিছু হটবে না, এদিন সাফ করে দেন মোদী।
এদিন বিহারে কিছু রেল প্রজেক্ট উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে আচমকাই এই বিল নিয়ে বলতে শুরু করেন মোদী। তিনি বলেন ন্যূনতন সহায়ক মূল্য উঠে যাচ্ছে না। সরকার যে চাষীদের থেকে কেনা বন্ধ করছে না, সেই নিয়েও আশ্বস্ত করেন তিনি। মোদী বলেন যে এই কৃষি সংস্কারের ফলে চাষীরা স্বাধীনতা পাবেন। এটিকে চাষীদের সুরক্ষাকবচ বলে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে বিরোধীরা দালালদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে ও চাষীদের বিভ্রান্ত করছেন।
বিরোধীরা অবশ্য বলছেন যে এই বিলগুলি চাষী বিরোধী। কোথাও এটি বলা নেই যে চাষীরা যে দাম পাবেন, সেটা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের চেয়ে কম হতে পারবে না, বলে এই বিলের বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস। হরিয়ানা ও পঞ্জাবে এই ইস্যুতে চাষী বিক্ষোভ ক্রমশই বাড়ছে। এর জেরেই নিজেদের অবস্থান বদলে বিলগুলির বিরোধিতা করার পথে গিয়েছে অকালি দল। তবে হরিয়ানায় বিজেপির সঙ্গী জেজেপি জানিয়েছে তারা কেন্দ্রের পাশেই আছে।
খুব সম্ভবত রবিবার এই বিলগুলি রাজ্যসভায় উঠবে। বিজেপির হিসেব মতো ২৪৫ জনের রাজ্যসভায় ১৩০ সদস্যের সমর্থন তারা পাবে। এর মধ্যে আছে এআইডিএমকে-র ৯, টিআরএসের ৭ ও ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ৬ সদস্য। বিজেপির আছে ৮৬জন সাংসদ, কংগ্রেসের ৪০।
অকালির তিন জন সাংসদ বিপক্ষে ভোট দিলেও শিবসেনার তিনজন এই বিলের সমর্থনে ভোট দেবে বলে জানা যাচ্ছে। প্রায় ১০০ জন সাংসদ সব মিলিয়ে এই বিলের বিরোধিতা করছে। অনেক ছোটো দলের অবস্থান যদিও এখনও স্পষ্ট। মোদীর দ্বিতীয় টার্মে এখনও পর্যন্ত রাজ্যসভায় তাঁকে সমস্যায় পড়তে হয়নি। সব বিলই পাশ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এবারের পরীক্ষা নিশ্চয়ই সবচেয়ে কঠিন। এদিনও জেপি নড্ডা বলেছেন রাজনীতি করে তাদের সিদ্ধান্ত বদলানো যাবে না। এই বিল পাশ করাতে বদ্ধপরিকর বিজেপি। বিরোধীররা বাড়া ভাতে ছাই দিতে পারে কি না, সেটাই দেখার।