চিনি থেকে তৈরি ইথানল। আর তাতেই গাড়ি চালানোয় জোর দিচ্ছে ভারত। আর এতেই ঘুম উড়েছে অনেকের। কারণ এই নীতি নিলে বিশ্বব্যাপী হু-হু করে বাড়তে পারে চিনির দাম।
খাদ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, সরকার একটি ইথানল প্রকল্পকে দ্রুতগতিতে কার্যকর করবে। এর মাধ্যমে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে বার্ষিক ৬ মিলিয়ন টন চিনি জ্বালানি উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হবে। এই একই পরিমাণ চিনিই ভারত প্রতি বছর রফতানি করে। চিনির ক্ষেত্রে ব্রাজিলের পরেই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদক ভারত।
২০২৫ সাল নাগাদ গ্যাসোলিনে ২০% ইথানল মিশ্রিত করতে হবে। পূর্বে এই সময়সীমা ২০৩০ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু জুন মাসে সেই সময়সীমা আরও ৫ বছর কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ইথানলের প্রয়োগ বৃদ্ধি পেলে রয়েছে বেশ কিছু সুবিধা। এর ফলে বায়ু দূষণ হ্রাস পাবে। দেশের তেল আমদানির খরচ হ্রাস পাবে। একই সঙ্গে দেশে চিনি উত্পাদন আরও বাড়বে। গ্রামাঞ্চলে বিনিয়োগও বৃদ্ধি পাবে।
তবে বাকি বিশ্বের জন্য, এই পদক্ষেপে চিনি শিল্পে সাম্প্রতিক ইতিহাসে বৃহত্তম পরিবর্তন হতে পারে। বিশ্বজুড়ে বিপুল পরিমাণ চিনি সরবরাহ করে ভারত। তার কিছুটা অংশও ইথানল তৈরির কাজে চলে গেলে তার প্রভাব পড়বে আন্তর্জাতিক বাজারে।

২০২৫ সালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য ভারতকে বর্তমানের তুলনায় বছরে প্রায় তিনগুণ ইথানল উৎপাদন করতে হবে। অর্থাত্ বছরে প্রায় ১০ বিলিয়ন লিটার ইথানল লাগবে। এর জন্য আনুমানিক ৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। তিন থেকে চার বছরের স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরিও বড় চ্যালেঞ্জ।
চিনিকলগুলোকে ডিস্টিলারি স্থাপন বা সম্প্রসারণের জন্য সরকার আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। কিছু মিলে চিনি উৎপাদন বন্ধ করা হবে এবং এর পরিবর্তে ইথানল তৈরির জন্য আখের রস প্রক্রিয়াজাত করা হবে।
ভারত এক্ষেত্রে ব্রাজিলেরই কৌশল অবলম্বন করছে। সেদেশে গত ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আখ-ভিত্তিক ইথানলের প্রচলন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বর্তমানে ব্রাজিল বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ফ্লেক্স-ফুয়েল গাড়ি রয়েছে।