বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খণিজ ঘিরে এতদিন পর্যন্ত চিনের ওপর ভারত নির্ভর করে থাকত। এবার সেই নির্ভরতার কিছুটা দিক কমাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে দিল্লি। সোমবার নরেন্দ্র মোদী ও স্কট মরিসনের বৈঠক ঘিরে একাধিক পদক্ষেপ উঠে এসেছে। এবার খণিজ ছাড়াও ছাত্র ইস্যু থেকে শুরু করে পেশাগত দিক দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে নতুন গাঁটছড়া বেঁধেছে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত।
দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ইন্দো-পেসিফিক এলাকায় ভারত ও অস্ট্রেলিয়া দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে একাধিক ক্ষেত্রে। উল্লেখ্য, এই সাক্ষাতের পর অস্ট্রেলিয়া ১৫৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে মহাকাশ গবেষণা, প্রযুক্তি, উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে। দুই দেশই সম্মত হয়েছে, কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক কো অপরেশন এগ্রিমেন্টের ক্ষেত্রে। এছাড়াও চাষাবাদ সংক্রান্ত বাণিজ্যের চূড়ান্ত রূপরেখা দেওয়ার বিষয়েও দুই দেশ সম্মত হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের কোয়াড বৈঠকের পর অস্ট্রেলিয়া ও ভারত দুই দেশের রাষ্ট্রনেতারা এই প্রথম মুখোমুখি হলেন ভার্চুয়াল মিটে। তারপর থেকে, উভয় পক্ষ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা উন্নত করেছে, একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যা সশস্ত্র বাহিনীকে রসদ এবং ঘাঁটিতে পারস্পরিক সহায়তা দেয় এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিতে সহযোগিতার পদক্ষেপ নিয়েছে। এদিনের বৈঠকের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হিন্দিতে ভাষণ দেন। সেখানে স্কট মরিসনকে তিনি 'ডিয়ার ফ্রেন্ড' বলে আখ্যা দেন। মোদী বলেন, 'আমাদের সম্পর্ক গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, শিক্ষা ও উদ্ভাবন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, এই সব ক্ষেত্রে আমাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে।' এদিকে, স্কট মরিসন বলেন, অতিমারী পরবর্তী দুনিয়ায় যাতে আরও এগিয়ে যাওয়া যায়, তাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দুই দেশ।
এরপরই জানা গিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার খনি দেখে ভারতে আসবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খণিজ। আর সেই মর্মেই এই স্বাক্ষরিত হয় একটি মৌ চুক্তি। ভারতের খানিজ বিদেশ ইন্ডিয়া লিমিটেড ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিটিক্যাল মিনারেল ফেসিলিয়েশন অফিস এই চুক্তি স্বাক্ষরিত করে। লিথিয়াম, কোবাল্ট এবং ভ্যানাডিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের সবচেয়ে বড় মজুদ ভাণ্ডার অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে, যা মোবাইল ফোন, বৈদ্যুতিক গাড়ি, সোলার প্যানেল এবং অন্যান্য হাই-টেক অ্যাপ্লিকেশন তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই সমস্ত খণিজের ক্ষেত্রে ভারত আগ্রাসী কূটনীতিতে অস্ট্রেলিয়া সহ একাধিক দেশের মুখাপেক্ষী হয়েছে, যাতে চিনের ওপর থেকে কাটানো যায় নির্ভরতা। উল্লেখ্য, বিশ্বের মোট খণিজ উত্তোলনের ৮০ শতাংশ পাওয়া যায় চিন থেকে। অন্যদিকে,
উভয় পক্ষ ভারতের জাতীয় বিনিয়োগ ও পরিকাঠামো তহবিল এবং অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যত তহবিল, একটি সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে। এছাড়াও দুই পক্ষের রাষ্ট্রপ্রধানরাই বার্ষিক প্রাতিষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনে সম্মত হয়েছেন। ভারত বর্তমানে শুধু জাপান ও রাশিয়ার সাথেই এই ধরনের ব্যবস্থা করেছে।