‘মোল্লারে মার, মোল্লারে মার….’, এমনই মন্তব্য করে তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলে দাবি করলেন বাংলাদেশের এক ব্যক্তি। তিনি দাবি করেছেন, গত ২৬ নভেম্বর যখন হিন্দু সন্ন্যাসী তথা সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাসকে চট্টগ্রাম আদালতে পেশ করা হচ্ছিল, সেইসময় যে সংঘর্ষ বেঁধে গিয়েছেন, তাতে আহত হন তিনি। আর চিন্ময় প্রভুর উসকানিতেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল বলে দাবি করেছেন ওই ব্যক্তি। একইসুরে চট্টগ্রামের আইনজীবীদের দাবি, চিন্ময় প্রভুর ‘উসকানিতে জঙ্গি ইসকনের' লোকজন ওই ব্যক্তিকে মারধর করেছেন।
চিন্ময় প্রভুর নামে মামলা দায়ের এনামুল হকের
ওই ঘটনায় চিন্ময় প্রভুকে মূল অভিযুক্ত করে রবিবার প্রায় ৬০০-৭০০ জনের মামলা করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ঢাকা ট্রিবিউনকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মহম্মদ আবু বকর সিদ্দিকির কোর্টে সেই মামলা দাবি করেছেন এনামুল হক নামে ব্যক্তি। যিনি ব্যবসায়ী এবং ইসলামি সংগঠন হেফাজত-ই-ইসলাম বাংলাদেশের সদস্য।
রবিবার মামলা দায়েরের মধ্যেই হেফাজত-ই-ইসলামের সদস্য দাবি করেছেন, তিনি বরাতজোরে তিনি বেঁচে গিয়েছেন। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম যমুনা টিভিতে তিনি বলেছেন, জমি রেজিস্ট্রির কাজের জন্য ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে এসেছিলেন। সেইসময় লাঠি, লোহার রড দিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়। চিন্ময় প্রভুর উসকানিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। উনি নিজের অনুগামীদের হামলা চালাতে বলেছিলেন। আর সেই প্ররোচনায় পা দিয়ে তাঁকে এমন মারধর করা হয় যে হাতে ‘ফ্র্যাকচার’ হয়ে গিয়েছে। দু'বার অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে বলে দাবি করেছেন হেফাজত-ই-ইসলামের সদস্য।
এতদিন পরে চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে মামলা কেন?
কিন্তু ২৬ নভেম্বর যে ঘটনা ঘটেছে, সেই ঘটনার অভিযোগ দায়ের করতে কেন ৮ ডিসেম্বর হয়ে গেল? ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি হাসপাতালে ভরতি থাকায় অভিযোগ জানাতে দেরি হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘এই মোল্লারে মার, মোল্লারে ধর, মোল্লারে মার বলার সঙ্গে-সঙ্গে আমার উপরে (হামলা চালানো হয়)। আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়েছেন। নাহলে ওরা আমায় মেরেই ফেলত।’
‘চিন্ময় প্রভুর উসকানিতে জঙ্গি ইসকনের’ হামলা, দাবি আইনজীবীর
সেই মামলার প্রেক্ষিতে এনামুলের আইনজীবী শামসুল আলম বলেছেন, 'চিন্ময় দাসের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্ররোচনায় সন্ত্রাসী, জঙ্গি ইসকনের দুষ্কৃতীরা যে হামলা করেছে, সেই ঘটনায় ওঁনাকে মূল আসামি করে আহত ব্যক্তি মামলা করেছেন।' সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন যে ন্যায়বিচার চান তাঁরা। পুলিশের প্রিজন ভ্যানে থাকার সময় হ্যান্ডমাইক নিয়ে চিন্ময় প্রভু প্ররোচনা দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন হেফাজত-ই-ইসলামের সদস্যের আইনজীবী। যে চিন্ময় প্রভু রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলায় আপাতত জেলে আছেন। আগেরদিন তাঁর শুনানিতে ভয়ে কোনও আইনজীবী আসেননি বলে দাবি করা হয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে তাঁর জামিন মামলার ফের শুনানি হবে।