মাসিক ভাড়া মাত্র ৪,৬১০ টাকা। তারপরও ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী বাসভবন ১০ জনপথের ভাড়া বকেয়া পড়ে আছে। সেইসঙ্গে দিল্লির আকবর রোড এবং চাণক্যপুরীতে সরকারের দেওয়া কংগ্রেসের যে দুটি ভবন আছে, ২০১৩ সাল থেকে সেই দুটিরও মাসিক ভাড়া দেওয়া হয়নি। ‘তথ্য জানার অধিকার আইনে’ (আরটিআই) জবাবে এমনই জানানো হয়েছে।
গুজরাটের মিথাপুরের সুরজিত প্যাটেলের আরটিআইয়ের জবাবে কেন্দ্রীয় আবাসন এবং নগরায়ন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লির ২৬ আকবর রোডে সরকারি বাংলার (কংগ্রেসের সদর দফতরের একাংশ, দলের মহিলা শাখা এবং সেবাদলের অফিস আছে) মাসিক ভাড়া হল ১২.৬৯ লাখ টাকা। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ভাড়া দেওয়া হয়নি। একইভাবে চাণক্যপুরীর ভবনের মাসিক ভাড়া ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মেটানো হয়নি। যে ভবনের মাসিক ভাড়া ৫.০৭ লাখ টাকায় ঠেকেছে।
নাম গোপন রাখার শর্তে কেন্দ্রের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘অনুমোদন ছাড়াই থাকার জন্য দুটি ভবনের মাসিক ভাড়া বেশি হয়ে গিয়েছে। কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমার বেশি যদি ভাড়াটে থাকেন, তাহলে মাসিক ভাড়া পৃথকভাবে হিসাব করা হয়। আরটিআইতে যে ভাড়ার উল্লেখ করা হয়েছে, তা গত মাসের (২০২২ সালের জানুয়ারি)। যে পরিমাণ ভাড়া বকেয়া আছে, তা অনেকটাই বেশি।’ তবে ঠিক কত টাকা বাকি আছে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি ওই আধিকারিক। এমনিতে আকবর রোডের বাংলা হল টাইপ-৮ ধরনের। যা ১৯৯৪ সালে সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটিকে বরাদ্দ করা হয়েছিল। ১৯৮৫ সালে দেওয়া হয়েছিল চাণক্যপুরীর ভবন।
অন্যদিকে ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর সঙ্গী হিসেবে সোনিয়াকে ১০ জনপথের বাংলো দেওয়া হয়েছিল। সেই টাইপ-৮ ধরনের বাংলোর মাসিক ভাড়া হল ৪,৬১০ টাকা। যা ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে মেটানো হয়নি। উল্লেখ্য, কেন্দ্রের উচ্ছেদ নোটিশের পর ২০২০ সালের জুলাইয়ে লোধি এস্টেটের বাংলো ছেড়েছিলেন সোনিয়ার মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা।
এমনিতে নিয়ম অনুযায়ী, দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে বাংলো দেওয়া হয়। অফিস নির্মাণের জন্য যখন কোনও দলকে জমি দেওয়া হয়, তখন সেই জমি হাতে আসার তিন বছরের মধ্যে ছেড়ে দিতে হয় সংশ্লিষ্ট বাংলো। সেখানে ২০১০ সালে জমি পেয়েছিল কংগ্রেস। বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের তরফে সরকারিভাবে মুখ খোলা হয়নি। তবে নাম গোপন রাখার শর্তে কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, 'বাংলোগুলি ব্যবহারের মেয়াদ বাড়িয়েছিল সরকার। আমাদের নয়া ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। করোনাভাইরাস মহামারীর জন্য কাজে বিলম্ব হয়েছে। সেই ভবন তৈরি হয়ে গেলেই আমরা বাংলো ছেড়ে দেব। নির্বাচনের জন্য সেই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে।'
যদিও কংগ্রেসের সেই যুক্তিতে পাত্তা দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র আরপি সিং বলেন, 'পরিবারতন্ত্রের দিন শেষ হয়ে গিয়েছে। সরকারি ভবনের জন্য কংগ্রেসকে অবশ্যই টাকা দিতে হবে। আমাদের সরকারের সময় যারা সরকারি ভবনে আছে, তাদের অবশ্যই ভাড়া দিতে হবে এবং মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তা ছেড়ে দিতে হবে।'