ইউক্রেনের পরমাণু কেন্দ্রগুলিতে একমাসের মধ্যে হামলা না চালানোর আলোচনার কিছুক্ষণের মধ্যেই রাশিয়া সে দেশের বসত এলাকায় বোমারু হানাদারি চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, রাশিয়া যুদ্ধবিরতি নিয়ে সরাসরি প্রতারণা করেছে। একদিকে যখন শান্তিচুক্তি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আলোচনায় ব্যস্ত, ঠিক তারপরেই ইউক্রেনের সুমিতে একটি হাসপাতালে হামলা চালায় রাশিয়া। এমনটাই দাবি করা হচ্ছে। রাশিয়া মুখে মুখে রাজি হলেও কার্যত মার্কিন মধ্যস্থতার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে বলে খবর।
জানা গেছে, পুতিন ও ট্রাম্পের ফোনালাপ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই, কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে। রাজধানীর আশেপাশের অঞ্চলে প্রায় ৪৫টি ড্রোন হামলা হয় এবং রাতভর রাজধানীজুড়ে বিমান বিধ্বংসী গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যায়।কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুচা ও রাজধানীর আশেপাশের অন্যান্য এলাকায় ড্রোন পড়ে অসংখ্য বাড়ি ও গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দুজন আহত হয়েছেন। পূর্বাঞ্চলীয় শহর সুমিতে, ড্রোন হামলা চালনো হয়েছে একটি হাসপাতালে। যার ফলে ১০০ জনেরও বেশি রোগীকে সরিয়ে নিতে হয়। আরেকটি পৃথক ঘটনায়, পাশের একটি গ্রামে একজন অসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।
ইউক্রেনও রাশিয়ার উপর দূরপাল্লার ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছে। মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রাসনোদার অঞ্চলে একটি তেল ডিপোতে হামলা চালিয়েছে তারা।রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক দাবি করেছে, তারা ৫৭টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে, যার বেশিরভাগই কুর্স্ক অঞ্চলে, যেখানে ইউক্রেনীয় বাহিনী সম্প্রতি গত সাত মাস ধরে তাদের দখলে থাকা একটি ছোট অংশ থেকে সরে যাচ্ছে।
জেলেনস্কি জানান, রাশিয়া কেবলমাত্র ইউক্রেনের পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিতে আক্রমণ না করার প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। তাই আলোচনার শেষেই ওরা সাধারণ মানুষের বসত এলাকায় একের পর এক বোমা নিক্ষেপ করতে শুরু করে। মঙ্গলবার পুতিন-ট্রাম্প দেড় ঘণ্টা ধরে ফোনে আলোচনার শেষে সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট কেবলমাত্র পরমাণু কেন্দ্রে হামলা না চালানোর শর্ত মঞ্জুর করেছেন। ইউক্রেন থেকে পশ্চিমী ও মার্কিন বাহিনী তুলে নেওয়া ও রাশিয়ার ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া, ন্যাটো বাহিনীর সক্রিয় হস্তক্ষেপ এবং গোয়েন্দা সাহায্য বন্ধ করার দাবিতে অনড় থেকে গিয়েছেন। সে নিয়ে ট্রাম্প ভাবনাচিন্তা করার অবকাশ চেয়েছেন।
এদিকে ফের আক্রমণকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জেলেনেস্কির দাবি, আলোচনার শেষেই ওরা সাধারণ মানুষের বসতি এলাকায় একের পর এক বোমা নিক্ষেপ করতে শুরু করে।