নাবালক ছেলে অত্যন্ত চঞ্চল। দুষ্টুমিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল মা। ছেলের অবাধ্য আচরণে কোনওভাবেই হতাশ হয়ে উঠেছিল জীবন। শেষ পর্যন্ত ৯ বছরের অবাধ্য ছেলেকে সামলাতে না পেরে নিজের হাতে খুন করল মা। এমনই ঘটনা ঘটল ত্রিপুরায়। সোমবার সন্ধ্যায় আগরতলার জয়নগরে ঘটে যাওয়া এমন মর্মান্তিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনায় ছেলেকে খুনের কথা স্বীকার করেছে সুপ্রভা বাল। তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: পথের কাঁটা সরাতে দেড় বছরের শিশুকে খুন, মা ও প্রেমিককে ফাঁসির সাজা দিল আদালত
জানা যাচ্ছে, ছেলেকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পরেই মৃতদেহের পাশে দীর্ঘক্ষণ বসেছিল সুপ্রভা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। তখনও ছেলের মৃতদেহের পাশেই বসেছিল ওই মহিলা। পুলিশের সামনে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছে সুপ্রভা। তাকে গ্রেফতারের পাশাপাশি মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ৯ বছরের নাবালককে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সুপ্রভা বাল একটি নির্মাণ সাইটে দিনমজুর হিসাবে কাজ করত। তার স্বামী অনেকদিন ধরেই নিখোঁজ রয়েছেন। তার এক মেয়ে রয়েছে। তিনি বিবাহিতা। তাই ছেলেকে নিয়ে একাই থাকছিল সুপ্রভা। পুলিশকে সে জানায়, তার ছেলে রাজদীপের অবাধ্য আচরণে সে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। রাজদীপ পড়াশোনা করতে চাইত না, কথার অবাধ্য ছিল, তাছাড়া সে টাকা চুরি করত। এনিয়ে ছেলেকে অনেক মারধর করেছে সুপ্রভা। কিন্তু, কোনওভাবেই ছেলেকে শান্ত করতে পারেনি।
মহিলা পুলিশকে জানায়, ‘ছেলের অবাধ্য আচরণের কারণে আমি কাজ করতে যেতে পারিনি, শান্তিতে থাকতে পারিনি। তাই আমি তাকে হত্যা করেছি এবং এর জন্য আমি জেলে যেতে প্রস্তুত আছি।’ পুলিশ তার বাড়ি থেকে দড়ি এবং একটি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করেছে। ছেলেকে খুনের জন্য এই সমস্ত সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, অনেকটা এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল পূর্ব বর্ধমানের রায়নাতে। সেক্ষেত্রেও অবাধ্য ছেলের দুষ্টুমিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন বাবা মা। যদিও সেক্ষেত্রে ৯ বছরের ছেলেকে খুনের ঘটনা ঘটেনি। চঞ্চল ছেলেকে শান্ত করতে বাবা মা স্থানীয় এক সাধুবাবারও দ্বারস্থ হয়েছিলেন। শেষে সাধুবাবার নিদানে চঞ্চল ছেলেকে শান্ত করতে শুনশান, নিশুতি রাতে দামোদরের বালির চরে পুঁতে রেখে দেন বাবা মা। সেই ঘটনায় নাবালকের বাবা, মা এবং দাদুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একইসঙ্গেই নাবালককে হোমে রাখা হয়।