নবরাত্রি আসন্ন। সেই উপলক্ষে মধ্যপ্রদেশের নানা জায়গায় গরবা নাচের আয়োজন করা হবে। তাতে যোগ দেবেন অসংখ্য মানুষ। সেই ভিড়ে যাতে কোনও অহিন্দু ঢুকে না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে 'অনবদ্য দাওয়াই' দিলেন রাজ্যের এক বিজেপি নেতা।
গরবার আয়োজকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, অনুষ্ঠানস্থলে ঢোকার মুখেই আগতদের গোমূত্র পান করতে দেওয়া হবে। তাঁরা যদি চট করে সেটুকু গলায় ঢেলে, ঢক করে গিলে নিতে পারেন, তবেই প্রমাণ হবে তাঁরা হিন্দু! এবং তারপরই তাঁদের অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকতে দেওয়া হবে!
বিজেপি নেতার এমন নিদানে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। আয়োজকদের অনেকেই বলছেন, এটা ওই নেতার একেবারেই ব্যক্তিগত পরিকল্পনা।
বিজেপির ইন্দৌর শাখার সভাপতি চিন্টু ভার্মা সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা সমস্ত গরবা আয়োজকদের অনুরোধ করেছি, যাতে তাঁরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের ভিতরে ঢুকতে দেওয়ার আগে তাঁদের সকলকেই গোমূত্র পান করতে দেন!'
বিজেপির ওই নেতা মনে করেন, 'আধার কার্ড জাল করা যেতে পারে। কিন্তু, একজন ব্যক্তি যদি হিন্দু হন, তাহলে তিনি অবশ্যই গোমূত্র পান করে তবেই গরবার অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করবেন। তিনি কখনই গোমূত্র পান করতে অস্বীকার করবেন না।'
প্রসঙ্গত, হিন্দু ধর্মে কোনও মন্ত্র উচ্চারণের এক চুমুক জল পানের রীতি রয়েছে। এক্ষেত্রে অনেকে বিভিন্ন নদীর জলও পান করেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন, এতে তাঁরা ভিতর এবং বাইরে থেকে শুদ্ধ হয়ে যান।
এবার গরবা নাচের আগেও সেই নিয়ম পালনের কথা বলছেন মধ্যপ্রদেশের ওই বিজেপি নেতা। শুধু ফারাকটা হল, জলের বদলে থাকবে গোমূত্র।
এমন নিদানে স্বাভাবিকভাবেই ওই বিজেপি নেতার সমালোচনায় সরব হয়েছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, বিজেপি ভালোই বুঝতে পারছে যে এবছরের হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর এবং মহারাষ্ট্র বিধানসভার নির্বাচনে তারা জিততে পারবে না। সেই কারণেই ধর্মীয় মেরুকরণের নিত্যনতুন ফিকির খোঁজা হচ্ছে।
কংগ্রেসের মুখপাত্র নীলাভ শুক্লার অভিযোগ, যখন গোশালা নির্মাণ করার দাবি তোলা হয়, তা নিয়ে বিজেপি নেতারা কোনও উচ্চবাচ্য করেন না। তাঁরা শুধুমাত্র এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করতে জানেন।
নীলাভ পালটা দাবি করেন, আমজনতাকে গোমূত্র পান না করিয়ে, বিজেপি নেতারাই বরং গরবার অনুষ্ঠানে ঢোকার আগে গোমূত্র পান করুন এবং সেই ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করুন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে গরবা অনুষ্ঠানে ঢুকে পড়ায় এবং সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অভিযোগে মধ্যপ্রদেশে একাধিক মুসলিম যুবককে গ্রেফতার করা হয়। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের ধারণা, সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই গোমূত্র পানের দাওয়াই দিয়েছেন ওই বিজেপি নেতা।