ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের 'অমুসলিম' তকমা দেওয়া হোক। পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষে এমনই বিল পেশ করল সেদেশের সাংসদ। বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সাংসদ কিসো মাল কিয়াল দাস বিলটি পেশ করেন। ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ প্রক্রিয়া ও পরিচালনা বিধির ১১৮ নম্বর ধারার অধীনে তিনি প্রাইভেট বিল পেশ করেন।
দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতেই 'অমুসলিম' তকমা দেওয়াটা প্রয়োজন বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকার এই বিলের বিরোধিতা করেনি। বিলটি সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। এটি নিম্নকক্ষের দ্বিপাক্ষিক কমিটির পর্যালোচনার পর, ভোটাভুটির জন্য উপস্থাপন করা হবে।
কিসো মাল কিয়াল দাস বিলে বলেছেন, 'সংখ্যালঘু ঘোষণার মাধ্যমে দেশের এক বড় সংখ্যক জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। এটি সাম্যের চেতনার পরিপন্থী। সংখ্যালঘু হিসেবে যাঁদের ধরা হচ্ছে, সেই জনসংখ্যা দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রের উন্নয়ন এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।'
তিনি বলেছিলেন, '(সংবিধানে) ৪ বার 'সংখ্যালঘু' শব্দটি এবং ১৫ বার 'অমুসলিম' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা সংবিধানের নীতি নির্ধারণকারীদের অভিপ্রায়কে নির্দেশ করে।' সুতরাং সংখ্যালঘুদের জায়গায় অমুসলিম শব্দটি ব্যবহার করে এই বৈষম্য দূর করতে হবে। তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রতিটি নাগরিকের সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য গঠনমূলক প্রচেষ্টা করতে হবে।
‘অমুসলিমরা’ পাকিস্তানের মোট ২২ কোটির জনসংখ্যার ৩.৫ শতাংশের কাছাকাছি। হিন্দুরা পাকিস্তানের বৃহত্তম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, পাকিস্তানে ৭৫ লক্ষ হিন্দু বাস করেন। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের মতে তাদের জনসংখ্যা ৯০ লক্ষেরও বেশি।
পাকিস্তানের হিন্দু জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ সিন্ধু প্রদেশে বসবাস করে। হিন্দুরা ছাড়াও পাকিস্তানের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মধ্যে খ্রিস্টান, আহমাদী, পার্সী এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা রয়েছেন।