একজন ব্যক্তি একাধিক ভাষা শিখতে পারেন। জাতীয় শিক্ষানীতি এবং ত্রিভাষা নীতির সমর্থনে মন্তব্য করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ সুধা মূর্তি। সম্প্রতি দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে জাতীয় শিক্ষানীতি ও হিন্দি আগ্রাসন নিয়ে তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন ও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। সোমবার সংসদে দাঁড়িয়ে ধর্মেন্দ্র বলেন, ‘রাজনীতির স্বার্থে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছেলেখেলা করছেন স্ট্যালিন।’পাল্টা ডিএমকে নেতা কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘মুখ সামলে কথা বলুন।’ এই বিষয়ে কেন্দ্রের বিরোধিতা করে তামিলনাড়ু সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি।
এই আবহে রাজ্যসভার সাংসদ সুধা মূর্তি বলেন, 'আমি সব সময় বিশ্বাস করি যে একজন ব্যক্তি একাধিক ভাষা শিখতে পারেন। আমি নিজে ৭-৮টি ভাষা জানি। তাই আমি শেখাটাকে উপভোগ করি। এবং শিশুরা প্রচুর আয় করতে পারে। আর শিশুরাও অনেক শিশু শিখতে পারবে। অন্যদিকে, কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদাম্বরম ত্রিভাষা নীতি ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, 'তামিলনাড়ু দ্বিভাষিক সূত্র, অর্থাৎ ইংরেজি এবং তামিল-এর পক্ষে যথেষ্ট কার্যকর।সেখানে তৃতীয় ভাষা বাধ্যতামূলক করা গ্রহণযোগ্য নয়।ইংরেজি আমাদের বাণিজ্য ও বিজ্ঞানে সঙ্গে সংযুক্ত করে, এবং তামিল আমাদের সংস্কৃতি এবং পরিচয় সংরক্ষণ করে। যদি কেউ তৃতীয় ভাষা শিখতে চায়, তবে তা তাদের নিজের ইচ্ছায়। এটি বাধ্যতামূলক করার কোনও কারণ নেই। আমাদের উপর তৃতীয় ভাষা চাপিয়ে দেওয়া সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য হবে।'
কংগ্রেস সাংসদ জেবি মাথার বলেন, 'বিজেপিকে বুঝতে হবে যে ভাষা ইস্যুটি একটি সংবেদনশীল আবেগের বিষয়। মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কিছু প্রচার করা উচিত নয়। ধর্মেন্দ্র প্রধান সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করছেন। আমরা বিরোধী দল ঐক্যের পক্ষে, এবং সেই কারণেই আমরা গতকাল সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেছি। জাতীয় শিক্ষা নীতিতে বিজেপির গোপন এজেন্ডা রয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী, ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন লাগাতার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন।তার জবাবে মঙ্গলবার রাজ্যসভায় জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'এই কাঠামোর অধীনে কোনও ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ব যেখানে বহভাষিকতা নিয়ে আলোচনা করছে, সেখানে আমরা একটা জায়গা আটকে নিজেদের মধ্যেই তর্কাতর্কি করছে।হিন্দি ভাষা আসলে তামিল ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষাদানকে উৎসাহিত করে।' তিনি তামিলনাড়ুর তথ্য তুলে ধরে বলেন, দেখা যাচ্ছে রাজ্যের সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা ইংরেজি মাধ্যমের দিকে বেশি করে ঝুঁকছে।শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০১৮-১৯ সাল থেকে ২০২৩-২৪ সালের শিক্ষাবর্ষে দেখা গেছে, ৬৭% শিক্ষার্থী এখন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ছে, যেখানে তামিল মাধ্যম স্কুলে ভর্তির হার ৫৪% থেকে কমেছে। রাজ্যের কমপক্ষে ৭৭৪টি সিবিএসই স্কুলে তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি পড়ানো হচ্ছে।