চলে গেল 'কলারওয়ালি'। মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা জেলার পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের কিংবদন্তি বাঘিনী। টাইগার রিজার্ভ আধিকারিকরা জানান, ১৬ বছর হয়েছিল কলারওয়ালির।
মধ্যপ্রদেশে বন্যপ্রাণ নিয়ে যাঁরা একটু খবর রাখেন, তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই এই বাঘটির বিষয়ে জানেন। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮-র মধ্যে মোট ৮ বার গর্ভবতী হয় কলারওয়ালি। মোট ২৯টি সন্তানের জন্ম দেয় এই বাঘিনী। আর সেই কারণেই 'সুপার মম'-এর আখ্যাও পেয়েছিল সে। কেউ কেউ ডাকতেন 'মাতরম'। বন বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আপাতত কলারওয়ালির ২৫ জন সন্তান দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পেঞ্চের অরণ্যে।
'বার্ধক্যজনিত কারণে ও বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিল। ১৪ জানুয়ারি তাকে ভুরা দেব নল্লার কাছে শেষ দেখা গিয়েছিল। ঠায় শুয়ে ছিল। ভেটেরিনারি ডাক্তাররা সমানে পর্যবেক্ষণে ছিলেন। তবে মাতরম হাঁটতে পারছিল না। শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ নাগাদ ও মারা যায়,' আবেগঘন গলায় বলেলেন পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের ফিল্ড ডিরেক্টর অলোক মিশ্র। 'মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে বার্ধক্যজনিত মাল্টি-অরগ্যান ফেলিওরের কারণে মৃত্যু হয়েছে,' জানান তিনি।
২০০৮ সালের মার্চ মাস। পর্যবেক্ষণ ও বনপ্রাণ রক্ষার অংশ হিসেবে একটি ফিমেল শাবককে রেডিয়ো-কলার পরিয়ে দেন দেরাদুনের বিশেষজ্ঞরা। দুই রেডিয়ো কলারটি কাজ করা বন্ধ করে। আবার ২০১০ সালের জানুয়ারিতে তাকে নতুন রেডিয়ো কলার পরানো হয়। আর তারপরেই বনকর্মীরা আদর করে তার নাম রাখেন কলারওয়ালি। সাফারির পর্যটকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বাঘ ছিল সে।
'একটা বাঘ ১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে বনে বাস করেছে। এটা একটা রেকর্ড। কলারওয়ালির বংশ শুধুমাত্র পেঞ্চের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ওর মেয়ে শাবককে পান্না টাইগার রিজার্ভে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। সে আবার সেখানে পাঁচটি শাবকের জন্ম দিয়েছে। কলারওয়ালির মেয়ে ও নাতি-নাতনিরা পান্না টাইগার রিজার্ভের বাঘের স্থানান্তর প্রকল্পের সাফল্যে অনেক অবদান রেখেছে,' জানান বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ অনিরুদ্ধ মজুমদার।
দার।