শর্তসাপেক্ষে গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহেও গর্ভপাত করাতে পারবেন মহিলারা। ভ্রুণের অস্বাভাবিকতা থাকলে ২৪ সপ্তাহ পরেও করা যাবে গর্ভপাত। তাছাড়া, আইনত গর্ভপাত করাতে পারবেন অবিবাহিতারাও। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় পাশ হল মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি (MTP) আইন।
গত বছরই লোকসভায় মার্চ মাসে বিলটি পেশ হয়। ফলে এবার সেটি আইন হয়ে গেল। মহিলারে গর্ভপাতের সময়সীমা বৃদ্ধি ও এই সংক্রান্ত অন্যান্য অধিকারই ছিল বিলটির প্রতিপাদ্য। নাবালিকা মা, নির্যাতিতা, গুরুতর শারীরিক জটিলতা ও ভ্রুণের ত্রুটি রয়েছে এমন ক্ষেত্রেই নারীদের কথা মাথায় রেখেই এই আইন উথ্থাপন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক এবং নীতি আয়োগ এই আইনের খসড়া তৈরি করে।
চিকিত্সকের পরামর্শ
তবে, অবশ্যই গর্ভপাতের আগে ২০ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে দুইজন চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে। তাঁরা ছাড়পত্র দিলে তবেই গর্ভপাত করানো সম্ভব। তবে, সবক্ষেত্রেই যাঁর গর্ভুপাত হচ্ছে, তাঁর পরিচয় থাকবে গোপন।
কোন ক্ষেত্রে ২৪ সপ্তাহের পরেও গর্ভপাত?
গুরুতর শারীরিক জটিলতার কারণে বা ভ্রুণের ত্রুটি থাকলে ২৪ সপ্তাহের পরেও গর্ভপাত করা যাবে। তবে, সেটি বিশেষ পরিস্থিতি হিসাবে বিবেচিত হবে। সেক্ষেত্রে মোট পাঁচজন চিকিত্সকদের টিম তৈরী হবে। তাতে থাকবেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, রেডিওলজিস্ট, সোনোলজিস্ট প্রভৃতি অভিজ্ঞ চিকিত্সকরা। তাঁরা সবুজ সংকেত দিলে তবেই হবে গর্ভপাত।
অধিকার অবিবাহিতাদেরও
এছাড়া নয়া আইনে গর্ভপাত করাতে পারবেন অবিবাহিতারাও। এতদিন শুধুমাত্র বিবাহিতদের এই অধিকার ছিল। গর্ভনিরোধক কাজ না করায় গর্ভসঞ্চার হলে সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন অবিবাহিতারাও।
রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং জানান, রাজ্যসভায় বিলটি একটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি উঠেছিল। যদিও ধ্বনি ভোটে সেই দাবি খারিজ হয়ে যায়। একই সঙ্গে কিছু সংশোধনীরও দাবি ওঠে, কিন্তু তাও খারিজ হয়।
এই বিলটির কিছু দিক নিয়ে সাধুবাদ জানালেও এর খামতির কথাও তুলে ধরেছেন বিরোধী দলের সাংসদরা। রাজ্যসভার তৃণমূলের সদস্য ডা. শান্তনু সেন জানান, 'যৌনকর্মীদেরও এই আইনে উল্লেখ করা উচিত ছিল।' সেই সঙ্গে গর্ভপাতের জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থারও দাবি করেন তিনি।