বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে মিউকোরমাইকোসিস। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছত্রাক সংক্রমণ বা ‘ব্ল্যাক ফাংগাস’-এ আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির মধ্যে এমনই জানালেন এইমসের অধ্যাপক তথা এন্ডোক্রিনোলজি অ্যন্ড মেটাবলিজম বিভাগের প্রধান নিখিল ট্যান্ডন।
সংবাদসংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, ‘বায়ুর মাধ্যমে ছড়াতে পারে মিউকোরমাইকোসিস। যদি কোনও ব্যক্তি সুস্থ থাকেন, তাহলে কোনও সমস্যা তৈরি করতে পারবে না। ফুসফুসেও মিউকোরমাইকোসিস প্রবেশ করতে পারে। তবে সেই সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।’ তিনি জানান, দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতার নির্ভর করে যে কেউ ‘ব্ল্যাক ফাংগাস’-এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। এইমসের অধ্যাপকের কথায়, ‘যদি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়, তাহলে শরীর লড়াই করতে পারে।’
‘ব্ল্যাক ফাংগাস’ বা মিউকোরমাইকোসিস কী?
অত্যন্ত গুরুতর এবং বিরল ছত্রাক সংক্রমণ। যা করোনাভাইরাসের কারণে আরও মারাত্মক হয়েছে। সেই সংক্রমণের ফলে একাধিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। মৃত্যু পর্যন্ত হয়। গত বছর যে অ্যাডভাইজারি জারি করা হয়েছিল, সেই অনুযায়ী সার্বিকভাবে মিউকোরমাইকোসিসের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশের মতো।
সেই সংক্রমণের ফলে সাইনাস বা ফুসফুসে বেশি প্রভাব পড়ে (শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীর প্রবেশ করলে)। আবার শরীরের কোনও কাটা, পুড়ে যাওয়া জায়গা বা ত্বকে অন্যান্য কোনও আঘাত দিয়ে ছত্রাক প্রবেশ করলে ত্বকে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। অ্যাডভাইজারি অনুযায়ী, শরীরের যে কোনও জায়গায় সেই সংক্রমণ হতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের এমনিতেই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তার ফলে ছত্রাক সংক্রমণে শিকার হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তবে স্বস্তির বিষয় যে মানুষ থেকে মানুষের দেহে সেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে না। একইসঙ্গে মানুষ এবং প্রাণীর মধ্যে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ ছড়ায় না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
উপসর্গ
অসাড় মুখ, নাকের একদিক বন্ধ, চোখে ফোলা বা ব্যথা। কাশি, জ্বর, মাথা যন্ত্রণার মতো উপসর্গও দেখা দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে ত্বকের যেখানে আঘাত আছে, সেখানে সংক্রমণ হতে পারে। তারপর তা দ্রুত শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে যেতে পারে। গায়ে ফোসকা, ত্বকে লালভাব-ফোলাভাবের মতো উপসর্গ নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিরোধের উপায়
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অসাড় মুখ, নাকের একদিক বন্ধ, চোখে ফোলা বা ব্যথার মতো উপসর্গগুলি দেখা দিলেই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো যত দ্রুত সম্ভব অ্যান্টি-ফাঙ্গাস থেরাপি শুরু করে ফেলতে হবে। এড়িয়ে যেতে হবে ধুলোর সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ। মাটি বা শ্যাওলা নিযে ঘাঁটাঘাটির সময় জুতো, লম্বা প্যান্ট পরতে হবে। সাবান এবং জল দিয়ে ত্বকের আঘাত পরিষ্কার করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।