কিছু দেশ নাকি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করে দেখানোর অপচেষ্টা করছে! আর তার জন্য তারা নাকি হাতিয়ার করছে সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুককে! অভিযোগ, ওইসব দেশ নাকি বাংলাদেশ সম্পর্কে সমাজমাধ্যমে ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে! যার ফলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
তাই এই ধরনের 'ভুয়ো খবর' বা 'ভার্চুয়াল অপপ্রচার' রুখতে এবার ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সাহায্য চাইল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার!
রবিবার ফেসবুকের 'পেরেন্ট কোম্পানি' বা মূল সংস্থা মেটা-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস-সহ অন্যরা। সেই বৈঠকে ইউনুস ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে সহযোগিতা চান বলে দাবি করছে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
'প্রথম আলো'-র ইংরেজি অনলাইন পোর্টালে এই সম্পর্কে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, সেই অনুসারে, রবিবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত সরকারি অতিথিশালা 'যমুনা'য় এই বৈঠক হয়।
সেই বৈঠকে মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা করেন মেটা-র মানবাধিকার নীতি বিভাগের ডিরেক্টর মিরান্ডা সিজনস। প্রথম আলো সূত্রে দাবি, ওই বৈঠকে মিরান্ডাকে ইউনুস বলেন, 'প্রবল পরিমাণে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে। এবং আমাদের তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে।'
ইউনিসের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মিরান্ডা তাঁকে জানান, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি নিয়ে সর্বদাই সতর্ক থাকে। তাদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কেউ বা কারা, কোনও ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে কিনা, সেই বিষয়ে অবহিত থাকতে এবং তা রুখতে ফেসবুকের মানবাধিকার নীতি অত্যন্ত স্পষ্ট ও সচেতন।
মুখ্য উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস ফেসবুকের প্রতিনিধির কাছে আরও একটি বিশেষ অনুরোধ করেন, তিনি বলেন, ফেসবুকের আরও বেশি করে 'ইউজার ফ্রেন্ডলি' প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত। যাতে তার মাধ্যমে তরুণ উদ্যোগপতিরা লাভবান হতে পারেন।
তাঁর কথায়, 'প্রযুক্তি আসলে একটি মাধ্যম, যার দ্বারা বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করা হয়। কিন্তু, আমরা কী করব, কোনও জিনিস কী কাজে ব্যবহার করব, সেটা কখনও প্রযুক্তি নির্ধারণ করে দিতে পারে না। তাই, এটিকে 'পারফেক্ট' করে তোলার জন্য আমাদের একে 'রিইঞ্জিনিয়ার' করতে হবে'।
তিনি আরও বলেন, 'ফেসবুকের সাহায্যে অফুরান সম্ভাবনা খুলে গিয়েছে। তরুণ উদ্যোগপতিদের তৈরি করতে ফেসবুককে কাজে লাগানো যেতে পারে।'
ইউনুস জানিয়েছেন, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম যাতে উপকৃত হয়, সেই স্বার্থেই দেশের সরকার আগামী দিনেও ফেসবুকের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।
প্রসঙ্গত, এই বৈঠকে মহম্মদ ইউনুস ও মিরান্ডা সিজনস ছাড়াও যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন - বাংলাদেশের এসডিজি বিষয়ক দফতরের প্রিন্সিপাল কো-অর্ডিনেটর লামিয়া মোরশাদ, মহম্মদ ইউনুসের দ্বিতীয় ব্যক্তিগত সচিব সাহিব এম খইরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ও নেপালের জন্য মেটা-র জন নীতি বিভাগের প্রধান রুজান সারওয়ার, মেটা-র অ্যাসোসিয়েট জেনারেল কাউন্সিল নায়নতারা নারায়ণ, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য মেটা-র ভুয়ো খবর নীতি বিভাগের প্রধান অ্যালি বুদিস্যাত্রিজো।