গতকাল ফেসবুক পোস্ট করে মহম্মদ ইউনুস বলেছিলেন, যাতে বাংলাদেশে আর কোথাও ধ্বংসলীলা না চালানো হয়। এমনকী শেখ হাসিনা বা তাঁর আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও যেন হামলা না চালানো হয়। তবে 'বিল্পবীরা' সেই কথা শোনেনি। তাঁরা শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তি ভেঙেছে বগুড়ায়। ব্রিটিশ জমানার টাউনহলও গুঁড়িয়ে দিয়েছে। প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা করতে দিয়ে আবার স্থানীয়দের হাতেই মার খেয়েছে কয়েকজন তথাকথিত বিল্পবী ছাত্র। এই সবের মাঝেই ইউনুসের প্রেস সচিব ফের একবার বাংলাদেশিদের নজর ঘোরাতে আঙুল তুললেন ভারতের দিকে।
বাংলাদেশের জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ সকালে ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, 'আওয়ামি লিগ এবং স্বৈরাচারী গুমের জননী চাইছেন বাংলাদেশের ন্যারেটিভ বদলে দিতে চাইছে। তাঁরা বলছেন তিন হাজার পুলিশ মারা গেছে বাংলাদেশকে। তাঁদের ওয়েবসাইটে অধ্যাপক ইউনূসকে জঙ্গিদের নেতা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। এটা খুবই পরিকল্পিত অপপ্রচার। এর সঙ্গে ভারতীয় মিডিয়াও জড়িত। হাসিনার অলিগার্কেরা মিলিয়ন ডলার খরচ করছে এর জন্যে।'
এদিকে শফিকুল আলম যাই বলুক না কেন, আওয়ামি লিগ পরবর্তী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি-ও ঠিক ইউনুসের সরকারকে ভরসা করতে পারছে না। প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির সভায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেন নেতারা। সেখানেই সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে, গণঅভ্যুত্থানের এতদিন পরে ফের এই অরাজক পরিস্থিতির নেপথ্যে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা হতে পারে। এই আবহে মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে দেখা করার জন্যে বিএনপি একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল মহম্মদ ইউনুসের তরফ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে সাধারণ মানুষকে ভাঙচুর থেকে বিরত থাকতে বারণ করা হয়। এমনকী নাম নিয়ে শেখ হাসিনা বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তিতে হামলা করা থেকে বিরত থাকতে বলেন ইউনুস। তবে তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গতকাল গভীর রাতে বগুড়ার শেরপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা। এই নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতা ইয়াসিন আলি প্রথম আলোকে অবশ্য বলেছেন, এই হামলার সঙ্গে তাদের যোগ নেই। তবে গতকাল গাজিপুরে আবার প্রাক্তন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হুসেনের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল। হামলাকারীদের পালটা মারধর করেছিলেন স্থানীয়রা। আর আজ আহত হামলাকারীদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দুই 'মুখ' হাসনাত ও সারজিস আলম। এই আবহে প্রশ্ন উঠছে, আদতে এই সব ভাঙচুরের নেপথ্যে কারা আছে? ইউনুসের সরকার কি ইচ্ছে করেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনছে না?