'আমাদের স্বাধীনতা অনেক বড় বড় দেশেরই ভালো লাগছে না।' বাংলাদেশের আওয়ামি লিগ-হীন সর্বদলীয় বৈঠকে এমনটাই বললেন মহম্মদ ইউনুস। ইউনুসের কথায়, '৫ তারিখে যে উত্তেজনা ও শক্তি নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করেছি, আমাদের ছাত্র জনতা বুক পেতে দেয়, সেই লক্ষ্যে ফাটল ধরেনি। সেই কথা দুনিয়ার সামনে প্রকাশ করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।' এদিকে ইউনুস ভারতের নাম না নিয়েই বলেন, 'কিছু বড় দেশ ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে। আমাদের স্বাধীনতাকে খর্ব করার চেষ্টা চলছে।' (আরও পড়ুন: 'সুখবর' পাওয়ার কথা ছিল নভেম্বরেই, ডিসেম্বরে কি সরকারি কর্মীদের মুখে ফুটবে হাসি?)
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম, সুনামঞ্জের পর নীলফামারি ও ঠাকুরগাঁওতেও মৌলবাদী হিংসার শিকার হিন্দুরা
আরও পড়ুন: ডিএ অবশেষে বাড়ল, দীর্ঘ অপেক্ষার পর লক্ষ্মীলাভ ৯ লাখ রাজ্য সরকারি কর্মীর
ইউনুস বলেন, 'আমরা এখনও কোনও দুর্বল হইনি। আমরা এখনও সেই জাতি, যারা এই ৫ অগস্ট থেকে স্বৈরচারী সরকারকে বিদায় দিয়ে যাত্রা শুরু করে। সেই জাতি এখনও সজাগ আছে, মজবুত আছে। সেই মজবুতিটাই দুনিয়ার সামনে তুলে ধরতে হবে। তারা যেন মনে করছে যে এরমধ্যেই আমরা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছি। ঠান্ডা আমরা হই নাই।… আমরা সতেজ, সেই জাতি মরে নাই, দুর্বল হই নাই, সবল আছে।' (আরও পড়ুন: হিন্দুদের ওপর হামলা নিয়ে UK সংসদীয় গোষ্ঠীর কথায় 'কান লাল', কী করল বাংলাদেশ সরকার)
আরও পড়ুন: 'তালিবানি সরকার চলছে বাংলাদেশে...', চার মাস অপেক্ষা করতে বললেন শুভেন্দু
এদিকে ইউনুস এই কথা বললেও বাংলাদেশের সুনামগঞ্জে হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে একদিন আগেই। উল্লেখ্য, ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট করার অভিযোগ উঠেছিল সুনামগঞ্জে। এরপরই সেখানে দোয়ারাবাজার উপজেলায় বিভিন্ন হিন্দুদের বাড়িতে হামলা হয়। চলে লুটপাট। এদিকে ধর্মীয় অবমাননার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে মংলারগাও গ্রামের বাসিন্দা আকাশ দাসকে (বয়স ২০ বছর)। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আকাশ দাস নাকি অন্য এক ব্যক্তির ফেসবুক পোস্টে গিয়ে ধর্মীয় অবমাননাকর কমেন্ট করেছিলেন। এই আবহে সুনামগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চড়াও হয় সুযোগ সন্ধানী মৌলবাদীরা। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সুনামগঞ্জের লোকনাথ মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়েছে যাতে অন্তত ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের বাজারে থাকা হিন্দুদের শতাধিক দোকানে ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হয়েছে। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গুরু দে’র বাড়িতে হামলা চালানো হয়। সেই এলাকার ১০টি হিন্দু বাড়িতে লুটপাট চালানো হয়। মংলাগাঁওয়ের শতাধিক হিন্দু বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। অনেকেই সেখান থেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। এবং ননিগাঁও পূর্ব হাঁটিতেও বহু হিন্দু বাড়িতে লুটপাট চালানো হয় বলে অভিযোগ। (আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আইনজীবী খুনে গ্রেফতার আরও এক হিন্দু; কিরিচ দিয়ে কুপিয়েছিল, বলল পুলিশ)
আরও পড়ুন: 'পরিস্থিতি ভালো করতে আমাদের পাঠানো হোক বাংলাদেশে', বললেন মমতার মন্ত্রী
আরও পড়ুন: 'এক মুখ্যমন্ত্রীর তো কথার ওজন থাকবে', মমতার মন্তব্য এখনও হজম হচ্ছে না ইউনুসদের
এছাড়াও মঙ্গলবার রাতে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার গাজিটেক গ্রামে হামলায় শ্রীশ্রী কালী মন্দিরটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম। সেখানে কালীমূর্তি ভাঙা হয়। তবে পুলিশের বক্তব্য, এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনা ঘটে যাওয়ার অনেক পড়ে গভীর রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এদিকে মংলাগাঁওয়ে বাংলাদেশ সেনা নাকি অস্থায়ী ঘাঁটি তৈরি করে সেখানে আছে। এছাড়াও নীলফামারি এবং ঠাকুরগাওঁতেও নাকি হিন্দুরা আক্রান্ত মৌলবাদীদের হাতে। অভিযোগ, এই সব জায়গায় বেছে বেছে হিন্দুদের মারা হচ্ছে। তাদের দোকানে দেদার লুটপাট চলছে। এদিকে অনেক হিন্দুর বাড়িতে নাকি অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনাও ঘটছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ঠাকুরগাওঁ এলাকায় চিন্ময় প্রভুর মুক্তি দাবি করায় এক হিন্দু যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়।