শনিবার দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছেন বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই আলোচনা পর্ব শুরুই হবে, আওয়ামী লিগের কট্টর বিরোধী বিএনপি-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, আগামী শনিবার যে রাজনৈতিক বৈঠকগুলি পুনরায় শুরু হচ্ছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন বিএনপির মিডিয়ার সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি জানিয়েছেন, বিএনপি-র যে প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নেবে, তার নেতৃত্বে থাকবেন সংগঠনের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সূত্রের খবর, আগামী শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল আড়াইটে নাগাদ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে, মির্জা ফখরুল ইসলাম ছাড়া বিএনপি-র এই প্রতিনিধি দলে আর কে কে থাকবেন, সেটা এখনও পর্যন্ত স্থির করা হয়নি। শুক্রবারের মধ্যেই সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমগুলিতে প্রকাশিত খবরে আরও জানানো হয়েছে, বিএনপি ছাড়া অন্যান্য দলের সঙ্গেও শনিবার বৈঠক করবেন মহম্মদ ইউনুস।
সেই তালিকায় নাম রয়েছে - বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সদস্যদের। তাদের নেতাদেরও ওই একই দিনে আলোচনায় বসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা তথা সিপিবি-র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আগামী শনিবার বিকেল চারটেয় বৈঠকে বসার জন্য তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, মুহম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আগামী শনিবার থেকে ফের বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করবেন। সেই বৈঠকগুলিতে উপদেষ্টারাও উপস্থিত থাকবেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের বাংলাদেশে গত ৮ অগস্ট মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত, মোট দুই দফায় উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়েছে। শনিবার সেই আলোচনা পর্বেরই পরবর্তী ধাপ অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবারের বৈঠকে সংশ্লিষ্ট ছ'টি সংস্কার কমিশন তৈরির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে তথ্য সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও কথা হবে। এক্ষেত্রেও রাজনৈতিক দলগুলির পরামর্শ নেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে আশা করা হচ্ছে, পরবর্তী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সংস্কার কমিশনগুলি গঠন করা হবে। উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মহম্মদ ইউনুস জানিয়েছিলেন, নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছ'টি কমিশন গঠন করা হবে।