যত বেশি ভিউ, তত বেশি টাকা। আর অল্প-আধটু নয়। অ্যাড রেভেনিউ, ব্র্যান্ড ডিলের মাধ্যমে মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করা যায় ইউটিউবে। শর্ত একটাই। ভালো ভিউ ও সাবস্ক্রাইবার কাউন্ট চাই। আর তার লোভে রীতিমতো নিজের স্বাস্থ্যও ধ্বংস করছেন 'কম্পিটিটিভ ইটার'-রা।
একদা মার্কিন মুলুকের মেলা, অনুষ্ঠানেই প্রতিযোগিতামূলক খাওয়া সীমাবদ্ধ ছিল। ভারতেও যে এই চল ছিল না, তেমনটা অবশ্য নয়। অতীতে বিভিন্ন বিয়েবাড়িতেই শোনা যেত যে, কেউ ৫০ পিস মাংস খেয়েছেন। কেউ আবার ১০০টি রসগোল্লা। কিন্তু এগুলি সবই এক-দু'মাস অন্তর।
কিন্তু ইউটিউবে ভিউ পেতে গেলে তো এত সময় নিলে চলবে না! তাই এক-দু'দিন অন্তর, বা রোজই বিপুল পরিমাণে খাচ্ছেন ইউটিউবারদের একাংশ। আর তা ভাইরাল হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ কেউ আবার খাবার খাওয়ার শব্দটাও ভালো মাইক্রোফোনে রেকর্ড করেন। কোরিয়ান কায়দায় 'মাকব্যাঙ' ভিডিয়ো বানান।
সম্প্রতি রামান নামের এক এমন 'ইনফ্লুয়েন্সার' ৫০টি অমলেট খাওয়ার ভিডিয়ো পোস্ট করেন। ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই ভিউয়ের জন্য ওই ব্যক্তির খাবার নষ্ট করার সমালোচনা করেছেন।
এ বিষয়ে এক চিকিত্সক জানালেন, 'এত বিপুল পরিমাণে কিছু খেলে হজমের সমস্যা তো হবেই। তাছাড়া রোজ এমন খেলে দীর্ঘমেয়াদী গুরুতর রোগ ও তার থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।'
তবুও কেন দিনের পর দিন এভাবে খেয়ে চলেছেন এই ইউটিউবাররা? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনপ্রিয় বাঙালি ইউটিউবার জানালেন, 'এই প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত আপলোড করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মাঝে বিরতি নিলেই ভিউ, অ্যাড রেভেনিউ কমে যাবে। তাই টাকা রোজগারের জন্য তাঁদের আর কোনও উপায় নেই। আর টাকার পরিমাণটাও নেহাত্ মন্দ নয়।'
তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তাঁদের বেশিরভাগই এত বিপুল পরিমাণ খাবার খেলেও তা হজম করেন না। অর্থাত্ ভিডিয়ো তোলা শেষ হলে বমি করে উগরে দেন। সেটাও যে শরীরের পক্ষে বেশ কষ্টদায়ক ব্যাপার তা বলাই বাহুল্য।