সংসদে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পেশ করলেন কিরেণ রিজিজু। সেই বিলের বিভিন্ন ধারা নিয়ে বিরোধীরা আপত্তি তোলায় সেটিকে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী। আর বিলের স্বপক্ষে উদাহরণ দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, 'সুরাট পুরনিগমের সদর দফতরকে ওয়াকফের সম্পত্তি বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ভাবতে পারেন? এটা কীভাবে হতে পারে?' সেইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন করেন, 'আমি বৌদ্ধ। আমি হিন্দু বা মুসলিম নই। কিন্তু আমি সব ধর্মকে সম্মান করি। এটাকে (বিল) একেবারেই ধর্মীয় বিষয় হিসেবে দেখি না। কোনও পুরনিগম কি ব্যক্তিগত সম্পত্তি হতে পারে? কীভাবে পুরনিগমের সম্পত্তিকে ওয়াকফের সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করা যেতে পারে?'
'মুসলিমদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন বিরোধী নেতারা'
ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পেশের পাশাপাশি সংসদে মুসলমান ওয়াকফ (প্রত্যাহার) বিলও পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী। সেই রেশ ধরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছেন, ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইন যেহেতু আছে, তার ফলে প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে ১৯২৩ সালের মুসলমান ওয়াকফ আইন। সেজন্য সেটিকে বাতিল করে দেওয়া উচিত।
সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে মুসলিমদের বিভ্রান্ত করার জন্য বিষয়টি নিয়ে হইচই করছেন বিরোধী নেতারা। তিনি দাবি করেন, এখন যে আইন আছে, তাতে অনেক গলদ আছে। তাই সংশোধনী আনতেই হত। নাহলে ওই আইনের কোনও প্রাসঙ্গিকতাই থাকবে না।
'পুরো গ্রামকে ওয়াকফ সম্পত্তি ঘোষণা করা হয়েছে'
আরও একটি উদাহরণ দেন রিজিজু। তিনি বলেন, 'তামিলানাড়ুতে তিরুচিলাপল্লি নামে একটি জেলা আছে। সেখানে ১,৫০০ বছরের পুরনো সুন্দরেশ্বর মন্দির আছে। সেখানে গিয়ে এক ব্যক্তি সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে চাইছিলেন। কিন্তু তাঁকে বলা হয় যে তাঁর গ্রাম নাকি ওয়াকফের সম্পত্তি হয়ে গিয়েছে। শুধু ভাবুন। পুরো গ্রামকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। এখানে ধর্ম দেখবেন না।'
‘সাধারণ মুসলিমরা ন্যায়বিচার পান না’
রিজিজ দাবি করেন, মুষ্টিমেয় কিছু লোক নিজেদের হাতে ওয়াকফ বোর্ড রেখে দিয়েছেন। সাধারণ মুসলিমরা ন্যায়বিচার পান না। তিনি যে বিল পেশ করেছেন, তাতে শিয়া, সুন্নি, বোহরা-সহ মুসলিমদের পিছিয়ে পড়ার শ্রেণির প্রতিনিধিরাও থাকবেন। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী দাবি করেন যে বছরের পর বছর ধরে একাধিক অনুসন্ধান রিপোর্টের ভিত্তিতে বিল তৈরি করা হয়েছে। আলোচনা করা হয়েছে লাখ-লাখ মানুষের সঙ্গে।