মায়ানমারের অং সান সু চি ও প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে সোমবার চার বছরের জেল দেওয়া হয়েছে৷ তবে এখনই তাঁদের জেলে নেওয়া হচ্ছে না বলে এএফপিকে জানিয়েছেন সামরিক জান্তার মুখপাত্র জ মিন তুন৷
গত ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মায়ানমারের ক্ষমতা নেয় সামরিক বাহিনী৷ এরপর অভ্যুত্থানের সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছিল সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি এনএলডি৷ সেই বিবৃতিকে ভিত্তি করে করা মামলার বিচারে সু চি ও উইন মিন্টকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়৷
আর করোনার নিয়মভঙ্গ করার জন্য আরও দু'বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়৷ গত বছর আয়োজিত নির্বাচনের সময় (যেটাতে এনএলডি নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছিল) ঐ দু'জন করোনার নিয়ম ভাঙেন বলে অভিযোগ করা হয়েছিল৷
তবে এখন তাঁদের জেলে প্রেরণ করা হবে না বলে জানিয়েছেন সামরিক জান্তার মুখপাত্র জ মিন তুন৷ তিনি বলেন, ‘ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে আরও মামলা চলছে৷ সেগুলি যতদিন চলবে, ততদিন তাঁরা এখন যেখানে আছেন সেখানেই থাকবেন৷ সু চি ও উইন মিন্টকে আটকের পর রাজধানী নেপিদোতে রাখা হয়েছে৷’
সু চি'র বিরুদ্ধে আরও যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মধ্যে আছে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট লঙ্ঘন করা, দুর্নীতি, নির্বাচনের কারচুপি ইত্যাদি৷ এসব মামলার রায় হলে সু চি'কে কয়েক দশকের জন্য কারাগারে যেতে হতে পারে৷ নেপিদোতে স্থাপিত বিশেষ আদালতে বিচার চলছে৷ সাংবাদিকদের সেখানে যেতে দেয়া হয় না৷ এছাড়া সু চি'র আইনজীবীদেরও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে৷
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশ বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল এই রায়ের কড়া সমালোচনা করেছেন৷ তিনি একে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ রায় বলে মন্তব্য করেন৷ রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল বাচেলেটও রায়ের কড়া সমালোচনা করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক বিরোধীদের সরাতে সামরিক বাহিনী আদালতকে ব্যবহার করছে৷’ ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেন, ‘সু চি'র বিরুদ্ধে রায় বিরোধীদের কণ্ঠরোধ এবং বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে চাপিয়ে রাখতে মায়ানমারের সামরিক শাসকের আরেকটি ভয়াবহ চেষ্টা৷’