আজ, বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিহারের রাজগীরে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করেছেন। তিনি নতুন ক্যাম্পাসের একটি ফলক উন্মোচন করেন। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর তৃতীয়বার শপথের পর এটাই প্রথম বিহার সফর। নালন্দার নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে মোদী জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ভারতের ঐতিহ্য জড়িয়ে রয়েছে। দেশের সম্মান, পরিচয়, মূল্যবোধ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত। এখানে আসতে পেরে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করেন।
এদিকে এখন বিহারের নীতীশ কুমারের দল এনডিএ সরকারের অন্তরাত্মা। কারণ বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। সেখানে নীতীশ এবং চন্দ্রবাবু নাইডুর দলের সমর্থনে গড়ে উঠেছে এনডিএ সরকার। তারপর এই বিহার সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধনের পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ঐতিহ্য ভারতকে মহিমান্বিত করেছে। শিক্ষা সংস্কৃতিতে বর্হিবিশ্বে ভারতের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছিল নালন্দা।’ ভারত এবং ইস্ট এশিয়া সামিট (ইএএস) দেশগুলির যৌথ উদ্যোগে এই নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: হজ যাত্রায় গিয়ে মৃত্যু ৬৪৫ পুণ্যার্থীর, তার মধ্যে ৬৮ জন ভারতীয়, ৫০ ডিগ্রির উপর তাপমাত্রা
অন্যদিকে আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, বিহারের রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকর, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। ১৭টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আর এখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য, ‘তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার ১০ দিনের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পেরে আমি খুব খুশি। নালন্দা কোনও নাম নয়, এটা একটা পরিচয়। আগুন বইকে পুড়িয়ে ফেলতে পারে। কিন্তু জ্ঞান ধ্বংস করতে পারে না।’ এই ক্যাম্পাসে দুটি অ্যাকাডেমিক ব্লক আছে। প্রত্যেকটিতে ৪০টি করে শ্রেণিকক্ষ আছে। প্রায় ১ হাজার ৯০০ জন ছাত্রছাত্রীরা এখানে পড়ার সুযোগ পাবেন। ৩০০ আসন বিশিষ্ট দুটি প্রেক্ষাগৃহ তৈরি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবাসে ৫৫০ জন থাকতে পারবেন।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি পরিবেশ বান্ধব। এখান থেকে কার্বন নিঃসরণ হবে না। নিজস্ব সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। পানীয় জল পরিশোধনের কেন্দ্র এবং বর্জ্য জল পুনর্ব্যবহার করার উপযোগী কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে ১০০ একরের জলাভূমি রয়েছে। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভারতের সৌভ্রাতৃত্বের মন্ত্র ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’–এর আত্মা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ভারত নয়, গোটা এশিয়ার ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। বিশ্বের নানা দেশ থেকে বছরের পর বছর ধরে এখানে পড়ুয়ারা জ্ঞান অর্জন করতে আসছেন। এখন নালন্দায় ২০টির বেশি দেশের ছাত্রছাত্রী রয়েছেন।’