গতবছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মহারাষ্ট্রে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের একটা মূর্তির উদ্বোধন করেছিলেন। নেভি দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে সেই মূর্তির আবরণ উন্মোচন করা হয়েছিল। আর ২৬ অগস্ট ২০২৪ সালে সেই মূর্তি ভেঙে পড়ে যায়। এরপর দেশ জুড়ে একেবারে হইচই। তবে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই মূর্তি ভেঙে পড়ার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করলেন।
মোদী জানিয়েছেন, '২০১৩ সালে বিজেপি আমায় প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছিল। আর প্রথম কাজটা আমি করেছিলাম যে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের সমাধিতে আমি ভক্ত হিসাবে বসেছিলাম রায়গড়ে ও একটা নতুন জার্নি শুরু করেছিলাম। আমার ও আমার সহকর্মীদের কাছে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ কেবলমাত্র একটি নাম নয়, তিনি আমাদের কাছে ভগবান। আমি ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের পায়ের নীচে নতমস্তকে ক্ষমা চাইছি। '
শুক্রবার পালঘরে ৭৪,০০০ কোটার বাঁধন বন্দর প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা জানিয়েছেন।
এদিকে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের ৩৫ ফুট উচ্চতার বিশাল মূর্তি। মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদুর্গ জেলায় গত বছরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিশাল মূর্তির উদ্বোধন করেছিলেন। গত বছর ৪ ডিসেম্বর নৌ সেনা দিবসে প্রধানমন্ত্রী এই মূর্তির উদ্বোধন করেছিলেন। মাস কয়েকের জন্যই ভেঙে পড়ল সেই বিশাল মূর্তি। একেবারে গোটা মূর্তিটাই ভেঙে পড়েছে। এরপরই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেন এভাবে গোটা মূর্তিটাই ভেঙে পড়ল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
মহারাষ্ট্রের স্বাভাবিকভাবেই শিবাজি মহারাজকে নিয়ে একটা আলাদা আবেগ রয়েছে। এভাবে তাঁর মূর্তি ভেঙে পড়ার ঘটনায় সেই ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে একেবারে মূল স্তম্ভ থেকে মূর্তিটি একেবারে নীচে পড়ে যায়। এই ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। কীভাবে এই ঘটনা হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এবার প্রশ্ন উঠতে থাকে এই মূর্তিটি তৈরি করেছিল কারা?
মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সম্প্রতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে সিন্ধুদুর্গ জেলায় মারাঠা আইকন ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের মূর্তি ভেঙে পড়েছিল, যা রাজ্য সরকার তৈরি করেনি।
তিনি বলেছিলেন, এটি ভারতীয় নৌবাহিনী দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। তিনি বলেন, রাজ্যে তাঁর দলের সরকার যোদ্ধা রাজার আরও বড় মূর্তি তৈরি করবে।
গত ডিসেম্বরে নৌবাহিনী দিবসে মারাঠা যোদ্ধা রাজার ৩৫ ফুট উঁচু মূর্তি উন্মোচন করা হয়েছিল। সোমবার বিকেলে সেটি ধসে পড়ে।
ফড়নবীশ বলেছেন, মূর্তি তৈরি ও স্থাপনের জন্য যারা দায়ী তারা গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় আবহাওয়ার কারণ এবং লোহার গুণমানকে উপেক্ষা করেছে।
তিনি বলেছেন, 'মূর্তি নির্মাণের বিষয়টি রাজ্য সরকার নয়, নৌবাহিনী তদারকি করেছিল। মূর্তিটি তৈরি ও স্থাপনের জন্য দায়ী ব্যক্তিরা সম্ভবত গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় কারণগুলি যেমন উচ্চ বাতাসের গতি এবং ব্যবহৃত লোহার গুণমানকে উপেক্ষা করেছিলেন। সমুদ্রের বাতাসের সংস্পর্শে আসার কারণে মূর্তিটিতে আরও মরিচা পড়ার প্রবণতা থাকতে পারে।