বর্তমান বিশ্বে ভারতের আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পাওয়া উচিত বলে জানালেন নরেন্দ্র মোদী। মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রসংঘের কাঠামোতে বদল আনার পক্ষে সওয়াল করলেন। এর আগেও মোদী একাধিকবার রাষ্ট্রসংঘে বদল আনার দাবি জানিয়েছেন। মার্কিন সফরে যাওয়ার আগে মোদীর গলায় ফের একবার শোনা গেল সেই দাবি। বর্তমানের বহুপাক্ষিক বিশ্বের দিকে তাকিয়ে রাষ্ট্রসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির কাঠামো বদল করা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন মোদী। বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলিকেও সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন মোদী। পরিবেশ থেকে শিক্ষার মতো ইস্যুতে ছোট দেশগুলির পাশে থাকার বার্তা দেন মোদী।
স্বাধীনতার পরপর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর 'জোট-নিরপেক্ষতা'র নীতি গ্রহণ করেছিল ভারত। তবে বর্তমানে ভারত 'বহুপাক্ষিক জোট' নীতি বিশ্বাসী। একদিকে যেখানে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের গভীর সম্পর্ক অটুট রয়েছে। সেখানেই আমেরিকার সঙ্গে দিনকে দিন ভারতের সম্পর্ক আরও মধুর হয়ে উঠছে। এই আবহে মোদীর বক্তব্য, 'আগের থেকে এখন বিশ্বের প্রতিটি দেশের একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর ভাবে জড়িয়ে পড়েছে। এই আবহে প্রতিটি দেশের স্বাধীন নীতিও রয়েছে। আগে এমনটা ছিল না। এই আবহে সরবরাহের শৃঙ্খলে আরও বৈচিত্র্য আসা উচিত।' মোদীর মতে রাষ্ট্রসংঘের মতো বহুজাতির সংগঠনের কাঠামোতে বদল আবশ্যক।
তিনি এই বিষয়ে বলেন, 'আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির সদস্যপদের দিকে নজর দিন। এগুলি কি সত্যি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিফলন? আফ্রিকার মতো দেশের কী কণ্ঠস্বর শোনা হয় সেখানে? ভারতের জনসংখ্যা এত বিশাল। তাছাড়া আমরা বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি উজ্জ্বল বিন্দু। তবে আমাদের অস্তিত্ব কী সেভাবে নজর পড়ে?' নরেন্দ্র মোদী জানান, বিগত বছরে ভারত শান্তিরক্ষা বাহিনীতে কতটা অবদান রেখেছে। এই আবহে মোদীর বক্তব্য, 'বর্তমান সদস্যপদের পুনমূল্যায়ণ করা উচিত। বিশ্বকেই প্রশ্ন করা উচিত যে নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের থাকার অধিকার রয়েছে কি না।' এদিকে সাক্ষাৎকারে মোদী আরও বলেন, 'ভারত কোনও দেশকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে চায় না। ভারত নিজের ন্যায্য স্থান চায়।'
দীর্ঘদিন ধরেই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য পদের দাবি জানাচ্ছে ভারত। বর্তমান দুনিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রসংঘের কাঠামোতে বদলের দাবি জানাচ্ছে ভারত। সেই দাবিকে সম্প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার সভাপতি সাবা করোসিও। সাধারণ সভার সভাপতি সংবাদসংস্থা এএআই-কে এই নিয়ে বলেন, 'যখন রাষ্ট্রসংঘ তৈরি হয় তখন ভারত শক্তিশালী ছিল না। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে পরিষদে আরও প্রতিনিধির প্রয়োজন রয়েছে। ভারত সেই স্থান পাওয়ার যোগ্য। আমার বিশ্বাস, বিশ্বের উন্নয়নের জন্য সার্বিকভাবে অবদান রাখতে পারবে ভারত।' প্রসঙ্গত, নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদকে সমর্থন জানিয়ে এসেছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও রাশিয়া। তবে বারবার তাতে ভেটো দিয়েছে চিন।