দু'দিনের সফরে ওয়াশিংটনে পৌঁছালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেই সফরের উপরে আশঙ্কার কালো মেঘ তৈরি করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি। মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের আগেই সম্ভবত ‘পালটা শুল্ক’ নীতি ঘোষণা করে দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অর্থাৎ যে দেশগুলি আমেরিকা থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপরে চড়া হারে শুল্ক ধার্য করে থাকে, তাদের থেকে রফতানিকৃত সামগ্রীর উপরে পালটা চড়া শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন। যে সিদ্ধান্তের প্রভাব ভারতের উপরে প্রবলভাবে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর মোদী যখন আমেরিকায় আছেন, সেইসময় ওই প্রতিশোধমূলক শুল্ক চাপানোর ঘোষণার মধ্যে বিশেষ তাৎপর্য আছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের আগেই ঘোষণা, ইঙ্গিত ট্রাম্পের
এমনিতে মোদীর মার্কিন সফরের যা সূচি, তাতে বৃহস্পতিবার সকালে (ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় অনুযায়ী) ট্রাম্পের ক্যাবিনেটের সদস্যদের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হবে। আর তারপর সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন মোদী। তার আগে বুধবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘আমি আজই (পালটা চড়া হারে শুল্ক চাপানোর বিষয়টি) ঘোষণা করতে পারি বা আগামিকাল সকালে করতে পারি। কিন্তু (যে দেশ আমেরিকা থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপরে চড়া হারে শুল্ক চাপায়, তাদের উপরে পালটা) চড়া শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করব।’
যেমন ব্যবহার করা হবে, তেমন ব্যবহার মিলবে, দাবি আমেরিকার
ট্রাম্পের মন্তব্যের মধ্যেই বুধবার ক্যারোলিন লিভিট জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট কেন পালটা শুল্ক চাপাতে চান, তার নেপথ্যে একেবারে সহজ যুক্তি আছে। তাঁর কথায়, ‘এটা একটা চিরন্তন নিয়ম। যা আমরা স্কুলে শিখেছি। অন্যের সঙ্গে সেরকমভাবেই আচরণ করুন, যেভাবে আপনার সঙ্গেও ব্যবহার করা হবে আপনি নিজে আশা করেন। আর এই বিশ্বের অনেক দেশ দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছিঁড়ে যাচ্ছে। আর তাই প্রেসিডেন্ট বিশ্বাস করেন যে এই নীতির কারণে আমেরিকার কর্মীরা লাভবান হবেন এবং জাতীয় সুরক্ষা বৃদ্ধি পাবে।’
ভারত সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে?
আর ট্রাম্প যে ‘প্রতিশোধমূলক’ চড়া হারে শুল্ক চাপানোর পথে হাঁটবেন, তা নির্বাচনী প্রচারের সময়ই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের দু'সপ্তাহের মধ্যে যে বাজেট পেশ করেছে, তাতে একাধিক পণ্যের উপরে শুল্ক কমিয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। ইঙ্গিত দিয়েছে যে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে আরও বেশি করে শক্তি সংক্রান্ত মার্কিন পণ্য কেনা হবে এবং আমেরিকা থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপরে শুল্ক কমানো হবে। এমনকী মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
সেই আবহে নয়াদিল্লির একাংশ আশাবাদী যে মোদী ও ট্রাম্পের মুখোমুখি আলোচনার মাধ্যমে অনেক মতপার্থক্য কেটে যাবে। বৃহত্তর ক্ষেত্রে ভারত এবং আমেরিকার কৌশলগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে দিশা দেখাবেন মোদী এবং ট্রাম্প।