ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেস সদস্য রো খান্না সম্প্রতি সেদেশের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থিকে আবেদন জানান যাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ভাষণ দেওয়ার জন্য কংগ্রেসের যৌথ সেশনে আমন্ত্রণ জানানো হয়। রো খান্নার এই দাবি ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা। বর্তমানে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অফ রিপ্রেসেন্টেটিভে সংখ্যাগরিষ্ঠ হল রিপাবলিকানকরা। ম্যাকার্থিও রিপাবলিকান। এদিকে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর সুসম্পর্ক সর্বজনবিদিত। এদিকে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে মোদীর সম্পর্ক বেশ ভালোই। এই আবহে আগামী বছরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মোদী যদি মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ রাখেন, তাতে সেদেশের রাজনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই আবহে মোদীকে ঘিরে সেদেশের রাজনৈতিক মহলেও জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে রো খান্না দাবি করেন, তিনি খুবই আশাবাদী যে স্পিকার ম্যাকার্থি মোদীকে কংগ্রেসের উভয় কক্ষের সামনে ভাষণ রাখতে আমন্ত্রণ জানাবেন। এদিকে রো খান্না নিজে ডেমোক্র্যাট। তিনি 'বাইপার্টিসান কংগ্রেশনাল ককাসে'র কো-চেয়ারম্যান। এদিকে ফ্লোরিডা থেকে নির্বাচিত রিপাবলিকান মাইকেল ওয়াল্টজ এই ককাসের অপর কো-চেয়ার। রো এবং মাইকেল উভয়ে মিলেই মোদীকে আমন্ত্রণ জানানোর আবেদন জানানোর পরিকল্পনা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। দুই নেতা স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে দেখা করেন। এরপর রো খান্না হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, 'আমাদের মধ্যে খুব ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে কংগ্রেসের যুগ্ম সেশনে ভাষণ রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তিনি আমন্ত্রণ জানাবেন।'
রো খান্না জানান, কেভিন ম্যাকার্থি ভারতকে মিত্র রাষ্ট্র হিসেবেই দেখেন। উল্লেখ্য, জো বাইডেনের আমন্ত্রণে আগামী ২২ জুন ওয়াশিংটন ডিসি-তে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেখানে মোদীর সম্মানে বাইডেন একটি সরকারি ডিনারের আয়োজন করবেন। এর আগে শুধুমাত্র দু'জন ভারতীয়র সম্মানে স্টেট ডিনারের আয়োজন করা হয়েছে আমেরিকায়। ১৯৬৩ সালে তৎকালীন ভারতীয় রাষ্ট্রপতি এস রাধাকৃষ্ণন এবং ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সম্মানে স্টেট ডিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। এবার মোদীর সম্মানে তা আয়োজন করছেন বাইডেন। জাপানে এই স্টেট ডিনারের উল্লেখ করেই বাইডেন মোদীর থেকে 'অটোগ্রাফ' চেয়েছিলেন।
জো বাইডেন তাঁকে বলেছিলেন, 'আপনি গোটা বিশ্বে এটা প্রমাণ করছেন যে গণতন্ত্রের দাম কতটা।' বাইডেন নাকি মজার ছলে এও বলেন, 'আপনি আমার জন্য সমস্যা তৈরি করে দিয়েছেন। পরের মাসে ওয়াশিংটনে আমরা আপনার সম্মানে একটি ডিনার পার্টির আয়োজন করব। সেই পার্টিতে গোটা দেশের সবাই যেন আসতে চাইছেন। আমাদের টিকিট শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে টিকিটের চাহিদা শেষ হয়নি। আপনার মনে হচ্ছে আমি মজা করছি? তাহলে আমার দলকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমি এমন সব মানুষের থেকে ফোন পাচ্ছি যাদের সঙ্গে আগে জীবনে কথা হয়নি আমার। সিনেমার অভিনেতা থেকে শুরু করে আমার আত্মীয়রা ফোন করে ডিনার পার্টির টিকিট চাইছেন। আপনি খুব বেশি জনপ্রিয়।'