বিগত বেশ কিছু দিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিয়ে তৈরি বিবিসির ডকুমেন্টারি নিয়ে বিতর্ক চলছে দেশে, বিদেশে। বিজেপির তরফে এবং সরকারের তরফে এই ডকুমেবন্টারিকে প্রচারমূলক আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এরই মাঝে এবার ইঙ্গিতবহ মন্তব্য শোনা গেল মোদীর গলায়। গতকাল দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের ক্যারিয়াপ্পা গ্রাউন্ডে এনসিসির সমাবেশে বক্তৃতা রাখতে গিয়ে মোদী বলেন, দেশের জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির প্রচেষ্টা চলছে। এই আবহে ভারতকে এগিয়ে যেতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদী বলেন, 'বিভিন্ন ইস্যু বের করে মা ভারতীর সন্তানদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।' তবে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, 'দেশের জনগণের মধ্যে যতই বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা হোক না কেন, দেশের মানুষ সর্বদা একজোট থাকবেন। মায়ের কোলে কখনও বিভেদ তৈরি করা যায় না।'
প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, 'ঐক্যের মন্ত্রই চূড়ান্ত প্রতিষেধক। একমাত্র এই উপায়তেই স্বমহিমা অর্জন করতে পারবে ভারত।' মোদী দাবি করেন, 'এটা স্পষ্ট যে ভারতের সময় এসে গিয়েছে।' তিনি বলেন, 'স্বপ্নগুলো যখন লক্ষ্যে পরিণত হয় এবং এর জন্য যখন জীবন উৎসর্গ করে দেওয়া হয়, তখন সাফল্য নিশ্চিত হয়।' উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই গুজরাট দাঙ্গার সময় নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তৈরি বিবিসি তথ্যচিত্র নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। একদিকে যেখানে জেএনইউ-তে এই ডকুমেন্টারি দেখানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়, ঝামেলা হয়। সেখানে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হওয়ার পর মামলা দায়ের হয়। তিরুবনন্তপুরমেও এই ডকুমেন্টারি ঘিরে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধেছিল বিজেপি কর্মী-সমর্খথকদের। এই আবহে এবার ডকুমেন্টারি বিতর্ক দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আমেরিকাতে পৌঁছেছে। ঝামেলা হয় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়েও।
উল্লেখ্য, এর আগে ভারত সরকারের তরফে বিবিসির এই তথ্যচিত্র নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছিল। বিদেশমন্ত্রকে মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র নিয়ে বলেছিলেন, 'এই তথ্যচিত্রটির পিছনে নির্দিষ্ট অ্যাজেন্ডা রয়েছে।' প্রসঙ্গত, ‘ইন্ডিয়া:দ্য মোদী কোয়েশ্চন’-এর দুই পর্বে ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় মোদীর 'ভূমিকা' তুলে ধরা হয়েছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও জানিয়েছেন, এই তথ্যচিত্রের মোদীর চরিত্রায়ণের সঙ্গে তিনি একমত নন। অভিযোগ, এই তথ্যচিত্রটিতে প্রধানমন্ত্রী তথা গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর 'ভুল চরিত্রায়ণ' হয়েছে। এই আবহে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিবের তরফে ইউটিউব ও টুইটারে সেই তথ্যচিত্র সংক্রান্ত যাবতীয় ভিডিয়ো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই তথ্যচিত্রের লিঙ্ক সম্বলিত ৫০টিরও বেশি টুইট ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup