'পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতিই এই অপূ্র্ব অঞ্চলটিকে (ভূস্বর্গ) ধ্বংস করে দিয়েছিল'। কিন্তু, সেই দিন আর নেই। কেন্দ্রে তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার দেশের নানা প্রান্তে কায়েম পরিবারতন্ত্র উৎখাত করতে রাজনীতির মঞ্চে নতুন নেতানেত্রীদের জায়গা করে দিয়েছে। আর, এই কারণেই জম্মু-কাশ্মীরের মাটিতেও শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার জন্য দিন গুনছে সন্ত্রাসবাদ - দাবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।
উপত্যকায় আসন্ন নির্বাচনের প্রচারে সামিল হয়ে শনিবার ডোডা জেলায় আয়োজিত একটি জনসভায় যোগ দেন মোদী। সেই মঞ্চ থেকেই কার্যত সন্ত্রাসবাদ উপড়ে ফেলার দাবি করেন তিনি। জনতার উদ্দেশে বলেন, 'আমরা এবং আপনারা একজোট হয়ে জম্মু ও কাশ্মীরকে দেশের অন্যতম সমৃদ্ধ অংশ হিসাবে গড়ে তুলব'।
আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথম দফার নির্বাচন হবে ভূস্বর্গে। তার এই প্রথম কোনও নির্বাচনী কর্মসূচিতে যোগ দিলেন মোদী। উপত্যকার স্থানীয় রাজনীতিকদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বলেন, 'স্বাধীনতার পর থেকেই জম্মু ও কাশ্মীর বিদেশি শক্তিগুলির নিশানায় থেকেছে এবং রাজনৈতিক পরিবারতন্ত্র এই সুন্দর অঞ্চলকে ভিতর থেকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই পরিবারগুলি কেবলমাত্র নিজেদের সন্তানদের কথাই ভেবেছে। নতুন নেতৃত্ব গড়ে উঠতে দেয়নি।'
মোদী স্পষ্ট ভাষায় জানান, কেন্দ্রে বিজেপির নেতৃত্বে সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকেই ভারতের রাজনীতিতে নতুনদের সুযোগ দেওয়ার পথ প্রশস্থ করেছে গেরুয়া শিবির। ফলে এক সম্পূর্ণ নতুন নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে।
এরপরই মোদী দাবি করেন, তাঁর সরকারের প্রচেষ্টাতেই আজ 'জম্মু-কাশ্মীরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করছে সন্ত্রাসবাদ।'
নাম না করে এদিন কংগ্রেস নেতা তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে নিশানা করেন মোদী। রাহুলের 'মহব্বত কি দুকান' স্লোগানের পাল্টা বিজেপি বিরোধীদেরই 'নফরত কি দুকান'-এর কারবারি বলে দেগে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যাঁরা এত দিন ধরে 'নফরত কি দুকান' (ঘৃণার দোকান বা ঘৃণার কারবার) চালিয়ে এলেন, তাঁরাই কিনা এখন 'মহব্বত কি দুকান' (ভালোবাসার দোকান বা ভালোবাসার পসার)-কে ঢাল করছেন!
কংগ্রেসের পাশাপাশি ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং পিডিপি-এর মতো স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলি সম্পর্কেও আমজনতাকে সতর্ক করেন মোদী। তাঁর হুঁশিয়ারি, এই দলগুলি যেসমস্ত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তা যদি সত্যি হয়, তাহলে উপত্যকায় ফের একবার সেইসব ভয়াবহ দিন ফিরে আসবে, যখন স্কুল বন্ধ থাকত, রাস্তায় উন্মত্তরা পাথর ছুড়ত!
বিরোধীদের এক বন্ধনীতে এনে এদিন মোদীকে বলতে শোনা যায়, 'কংগ্রেস, পিডিপি এবং এনসি আবারও একবার ৩৭০ ধারা বলবৎ করতে চাইছে। এর অর্থ হল, নির্দিষ্ট তিনটি পরিবারের সদস্যরা ফের একবার পাহাড়িদের অধিকার কেড়ে নেবেন। যদি ওদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে ফের একবার স্কুলে আগুন জ্বলবে, শিশু-কিশোররা হাতে পাথর নিয়ে ঘুরে বেড়াবে এবং লাগাতার ধর্মঘট চলবে। ওরা সংবিধানের কথা বলছে। ওরা আসলে নফরত কি দুকানের সামনে মহব্বত কি দুকানের সাইন বোর্ড লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন.'