ইউক্রেনে চলা যুদ্ধে লড়াই করার জন্যে বিগত দিনে বহু দেশ থেকেই যুবকদের নিজেদের সেনায় ভরতি করিয়েছে রাশিয়া। এর মধ্যে ভারতেরও প্রচুর সংখ্যক যুবক রয়েছে। তাঁদের অনেককেই কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে সেনায় যোগদান করিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এহেন পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকজন ভারতীয়র মৃত্যুও হয়েছে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে। অনেক ভারতীয়ই সেখানে আটকে পড়েছেন। তবে এবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এই নিয়ে কথআ বললেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। আর তারপরই রুশ সেনায় থাকা ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ক্রেমলিন। এটা ভারতের একটি বড় কূটনৈতিক জয় হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। (আরও পড়ুন: আন্তরিক আলিঙ্গন থেকে নৈশভোজ, পুতিন-মোদী 'কেমিস্ট্রি' দেখে কী বলল আমেরিকা?)
আরও পড়ুন: 'আপনি ঠিকই বলেছেন...', পুতিনের মুখে নিজের বন্দনা শুনে অকপট মোদী
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী গতকাল রুশ প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে যান। সেখানে মোদী ও পুতিনের একান্তে কথা হয়। এই আলাপচারিতা আনুষ্ঠানিক না হলেও এই সময়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মত বিনিময় হয় দুই রাষ্ট্রনেতার। তার মধ্যে অন্যতম ছিল রুশ সেনায় ভারতীয়দের ভরতির ইস্যুটি। রিপোর্ট অনুযায়ী, পুতিনের সঙ্গে এই নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেন মোদী। রুশ সেনায় ভরতি থাকা ভারতীয়দের অব্যহতি দিয়ে তাঁদের দেশে ফেরানোর দাবি জানান মোদী। আর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে এই নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ক্রেমলিন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। সেই যুদ্ধ এখনও চলছে। সেই যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে লড়াই করতে গিয়ে সাম্প্রতিককালে প্রাণ হারিয়েছেন একাধিক ভারতীয়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছিল ভারত। কোনওভাবেই যাতে ভারতীয়দের সেদেশের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ না করা হয় সে বিষয়ে রাশিয়াকে বার্তা পাঠিয়েছিল দিল্লি। একইসঙ্গে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যে সমস্ত ভারতীয় যুক্ত রয়েছে তাদের অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে ১০০ জন ভারতীয় কর্মী নিয়োগের খবর পাওয়া গেলেও গত ফেব্রুয়ারিতে বিদেশ মন্ত্রক জানায়, ২০ জন ভারতীয় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। সেই সমস্ত ভারতীয়রা দেশে ফিরে আসতে চেয়েছে। এরপরেই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সব রকমের চেষ্টা করা হয়। জানা যাচ্ছে, রাশিয়ায় যে সমস্ত ভারতীয়কে সেনাবাহিনীতে ভরতি করা হয়েছিল তাদের দুবাই ভিত্তিক একটি সংস্থার মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছিল এবং ইউটিউবের মাধ্যমে তাদের প্রলোভন দেখানো হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয়রা রাশিয়া পৌঁছে গেলে তাদের সেখানে নথিতে স্বাক্ষর করতে হচ্ছে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর আগে ১৫ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।