নয়াদিল্লি-কাশ্মীর রুটে সরাসরি ট্রেন পরিষেবা উদ্বোধন করার আগেই সোমবার নবনির্মিত জম্মু রেল বিভাগের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, 'এর ফলে শুধুমাত্র জম্মু-কাশ্মীরই নয়, হিমাচলপ্রদেশ এবং পঞ্জাব এবং লে-লাদাখের শহরগুলিও উপকৃত হবে।'
এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মোদী জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে মোদী বলেন, 'জাতীয় রেল যোগাযোগব্যবস্থায় জম্মু ও কাশ্মীরের এই অন্তর্ভুক্তি ভারতীয় রেলকে দক্ষতা, গতি ও যাত্রী পরিষেবা প্রদানের প্রশ্নে অনেকটাই এগিয়ে দিল। যা আগামী দিনে ভারতীয় রেলের পক্ষে বিশ্বমানের নেতৃত্ব প্রদানের পথে একটি স্মরণীয় পদক্ষেপ হয়ে থাকবে।'
মোদী আরও বলেন, 'জম্মু রেল বিভাগ শুধুমাত্র জম্মু ও কাশ্মীরকেই নয়, হিমাচলপ্রদেশ, পঞ্জাবের বেশ কয়েকটি শহর এবং লে-লাদাখকেও উপকৃত করবে।...'
'রেলের পরিকাঠামো নির্মাণে আজ আমাদের জম্মু ও কাশ্মীর এক নতুন রেকর্ড স্থাপন করল। উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেল সংযোগ প্রকল্প নিয়ে সারা দেশে আলোচনা চলছে। এই প্রকল্পটি ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের যোগাযোগব্যবস্থা আরও ভালো করবে।'
এদিনের এই উদ্বোধনী মঞ্চ থেকেই ভারতের আধুনিক প্রযুক্তি দক্ষতার আরও দুই উদাহরণ - রিয়াসি জেলায় চেনাব নদীর উপর বিশ্বের সর্বোচ্চ রেল খিলান সেতু এবং অঞ্জি নদীর উপর দেশের প্রথম কেবল রেল সেতুর প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন মোদী। প্রসংশা করেন এই দুই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের।
অন্যদিকে, জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই প্রচেষ্টার সাধুবাদ জানান। তাঁর মতে, এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে আদতে রেলপথের সাহায্যে কন্যাকুমারীর সঙ্গে কাশ্মীরকে সংযুক্ত করার স্বপ্ন সার্থক করে তোলার প্রয়াস করা হয়েছে।
জম্মু রেল বিভাগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মনোজ সিনহা বলেন, 'রেলব্যবস্থার মাধ্যমে কন্যাকুমারীর সঙ্গে কাশ্মীরকে যুক্ত করার স্বপ্ন ছিল এবং আজ তা বাস্তবায়িত হয়েছে।' তাঁর কথায়, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করছে।'
এদিকে, জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও এই সরাসরি রেল যোগাযোগব্যবস্থার পক্ষেই সায় দিয়েছেন। আমজনতার মন থেকে সমস্ত সংশয় ও শঙ্কা দূর করতে সোমবার রাজ্যবাসীর উদ্দেশ তিনি বলেন, কাশ্মীরের সঙ্গে সরাসরি রেল সংযোগ স্থাপিত হলে জম্মুর কোনও অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে না। বরং, আমজনতার দীর্ঘদিনের এই দাবি পূরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ কাটরা-রিয়াসি রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ৭ ও ৮ জানুয়ারি রেল নিরাপত্তা কমিশনার (সিআরএস) চূড়ান্ত পর্যায়ের পরিদর্শন শেষ করলেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লি থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত সরাসরি এই ট্রেন পরিষেবার উদ্বোধন করবেন। অনুমান করা হচ্ছে, আগামী ২৬ জানুয়ারির আগেই সেই কাজ হয়ে যাবে।