সদ্য প্রয়াত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেক দেবরায়। তাঁর প্রয়াণের পর তাঁর স্ত্রী সুপর্ণাদেবীকে শোকবার্তা জানিয়ে এক আবেগঘন চিঠি লেখেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নানান পুরনো কথা তুলে ধরেন। বিবেক দেবরায়কে ঘিরে তাঁর ভাবনাও ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের প্রথম সারির অর্থনীতিবিদদের মধ্যে একজন বিবেক দেবরায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নীতি আয়োগের সদস্যও ছিলেন তিনি। তবে কেন্দ্রে মোদী সরকার আসার আগে থেকেই বিবেক দেবরায়ের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর পরিচিতি ছিল। সেকথা বিবেক পত্নী সুপর্ণাকে লেখা চিঠিতে তুলে ধরেন মোদী। চিঠিতে মোদী লেখেন,'ইতিহাস, সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতায় তাঁর গভীর জ্ঞান ছিল। তাঁর গভীর চেতনা প্রকাশ হয়েছে, মহাভারত, গীতা, হরিভস্ম, পূরাণ সহ নানান বিষয় নিয়ে তাঁক কাজে। তিনি এই বইগুলি গ্রহণযোগ্য করে তুলেছিলেন।' মোদী ওই চিঠিতে লেখেন, ‘আমি খুবই খুশি যে আমি তাঁকে আজ থেকে চিনি না, আমি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন থেকে চিনি। যখন আমি প্রধানমন্ত্রী হই, তখন ওঁর সঙ্গে আমার বহুবার কথপোকথন চলেছে। নানান ধরনের বিষয়ে তিনি সর্বদাই ভালো প্রস্তুতি নিয়ে থাকতেন আর কথা বলতেন। আমি সেই কথপোকথনগুলো এখনও মনে করি, সেই কথাগুলোর প্রবল গভীরতার কারণে, সাধারণ ভাবনার কারণে।’ মোদীর লেখা এই চিঠি এক্স-এ পোস্ট করেন বিবেক দেবরায়ের স্ত্রী সুপর্ণা। তিনি লেখেন,' এই অন্ধকার সময়ে, অপ্রতিরোধ্য শোকের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক চিঠিটি একটি বিরল সান্ত্বনা।'
বিবেক দেবরায়ের মতো তাবড় বাঙালি অর্থনীতিবিদ তথা অনুবাদক একাধিক পদে ছিলেন। বিবেক দেবরায়ের জন্ম হয়েছিল শিলংয়ের এক বাঙালি পরিবারে। ১৯৫৫ সালের ২৫ জানুয়ারি তাঁর জন্ম। তাঁর দাদু সিলেট থেকে শিলংয়ে এসেছিলেন। বিবেক দেবরায় নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলে পড়াশোনা করেছিবেন। এরপর তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে এবং দিল্লি স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে পড়াশোন করেন। পরে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত নীতি আয়োগের সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। এর আগে পুণের গোখলে ইনস্টিটিউট অফ পলিটিক্স এবং ইকনমিক্সের চ্যান্সেলার পদেও কাজ করেছেন তিনি। ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রধান পদেও ছিলেন তিনি। তিনি পদ্মশ্রীতে ভূষিত হয়েছিলেন ২০১৫ সালে।