মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এক গবেষণায় উঠে এল মারাত্মক পূর্বাভাস। চাঁদের আকর্ষণের ফলে সমুদ্রের জলস্তর হঠাৎ অনেকটা বৃদ্ধি পেতে পারে। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব তো আছেই। ২০৩০-এর দশকে রেকর্ড বন্যা হতে পারে পৃথিবী জুড়ে, ধারণা নাসার।
নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালে গত ২১ জুন এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে নাসা।
'নুইস্যান্স ফ্লাড' নামের এই জাতীয় বন্যা বর্তমানে মূলত উপকূলবর্তী এলাকায় দেখা যায়। এক্ষেত্রে সাধারণত জোয়ারের সময়ে জলস্তর অন্যান্য সময়ের তুলনায় ২ ফুটেরও বেশি বেড়ে যায়। উপকূল এলাকায় ২ ফুট জল বৃদ্ধি আপাতভাবে বেশি মনে না হলেও, এর প্রভাব অপরিসীম। সৈকতসংলগ্ন শহর, গ্রামগুলি এর ফলে প্রভাবিত হয়।
নাসার গবেষণা বলছে, আগামী ২০৩০-এর দশকেই এই 'নুইস্যান্স ফ্লাডের' সংখ্যা ভয়ানকভাবে বৃদ্ধি পাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ উপকূলবর্তী এলাকায় এর ফলে জোয়ারের সময়ে জলস্তর ৩-৪ গুণ বৃদ্ধি পাবে।
সারাবছর ধরেই যে এমনটা চলবে, তা কিন্তু নয়। বছরের কয়েক মাসের মধ্যেই ঘন ঘন এমনটা হবে বলে পূর্বাভাস গবেষকদের।
'সমুদ্রের নিকটবর্তী নিচু এলাকাগুলির ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। ইতিমধ্যেই বহু স্থানে জলস্তর বৃদ্ধির ফলে সংকট দৃশ্যমান। সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে,' জানিয়েছেন নাসার আধিকারিক বিল নেলসন। চাঁদের মহাকর্ষীয় টান, সমুদ্রের জলস্তর এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে সময়ের সঙ্গে এভাবেই বন্যা বাড়বে, জানান তিনি।
পৃথিবীতে চাঁদের প্রভাব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এই গবেষণার মূল বিজ্ঞানী ফিল থম্পসন বলেন, 'চাঁদের ওয়াবলের প্রভাবে জলস্তর বাড়বে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এর প্রভাব আরও মারাত্মক হতে পারে।'
ফলে সময় থাকতেই এই বিষয়ে উপকূলবর্তী শহরগুলিতে সাবধানতা অবলম্বন প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে, এত বেশি বন্যা মোকাবিলা সত্যিই কোনও উপায় আছে কিনা, তাই নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।