দিল্লিতে ইয়ং ইন্ডিয়ানের কার্যালয় সিল করে দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কার্যালয়ের বাইরে নোটিশ ঝুলিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা নির্দেশ দিয়েছে, 'অনুমতি ছাড়া কার্যালয় খোলা যাবে না।' সেইসঙ্গে কংগ্রেসের সদর দফতরের বাইরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মঙ্গলবারই সংবাদপত্র ন্যাশনাল হেরাল্ড সংক্রান্ত আর্থিক তছরুপের মামলায় দিল্লির হেরাল্ড হাউস-সহ প্রায় এক ডজন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। সেই অভিযানের বিষয়ে অবহিত কয়েকজন আধিকারিক জানিয়েছিলেন, নথি সংগ্রহের জন্য তল্লাশি চালানো হয়েছে। যে নথি ন্যাশনাল হেরাল্ড সংক্রান্ত আর্থিক তছরুপের মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। মূলত তথ্যপ্রমাণ আরও জোরদার করার জন্য কংগ্রেসের মালিকাধীন দিল্লির হেরাল্ড হাউস-সহ প্রায় এক ডজন জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছিল।
রাহুল এবং সোনিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ
গত জুনে ন্যাশনাল হেরাল্ড সংক্রান্ত আর্থিক তছরুপের মামলায় একাধিকবার কংগ্রেস সাংসদ রাহুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। পাঁচদিনে তাঁকে ৫০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তারপর রাহুলের মা তথা কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়াকেও ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। সূত্রের খবর, তিনদিনে প্রায় ১১ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ-পর্বে ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেডে তাঁর দৈনন্দিন কাজ, কীভাবে অর্থ সংগ্রহ করা হয় এবং অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল লিমিটেডের অধিগ্রহণের বিষয়ে তাঁর থেকে বিভিন্ন তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল।
তবে কংগ্রেসের দাবি, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে ইডিকে ব্যবহার করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তা নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। বিশেষত দিল্লিতে ইডির অফিসে রাহুলদের হাজিরার দিনে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তারইমধ্যে আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের (PMLA) আওতায় গ্রেফতারি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার মতো কঠোর পদক্ষেপের সাংবিধানিক বৈধতা বজায় রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: Sonia Gandhi Questioned by ED: তৃতীয় রাউন্ড জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ED দফতর থেকে বেরিয়ে এলেন সোনিয়া গান্ধী
আর্থিক তছরুপ বিরোধী আইনের আওতায় কঠোর পদক্ষেপ এবং ইডির ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করে যে একগুচ্ছ আবেদন দাখিল করা হয়েছিল, তা বুধবার খারিজ করে দেয় বিচারপতি এএম খানউইলকরেরর নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ইডির তদন্তের মুখে পড়া একাধিক ব্যক্তির দাখিল করা আর্জিতে দাবি করা হয়েছিল, সংবিধানের ২০ ধারা এবং ২১ ধারার যে অধিকার স্বীকৃত আছে, তা লঙ্ঘিত হয়েছে আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনে। সেইসঙ্গে তাঁদের অভিযোগ ছিল, ইডির হাতে যে ক্ষমতা আছে এবং আইনের ব্যাপকতার কারণে যে কোনও অপরাধকে আর্থিক তছরুপে পরিণত করে নেওয়া হচ্ছে।
সেই প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত জানায়, গ্রেফতারি, তল্লাশি অভিযান, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার মতো পদক্ষেপের জন্য ইডির হাতে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, তা সাংবিধানিকভাবে বৈধ। কোনওরকম স্বেচ্ছাচারিতা নয়। সেইসঙ্গে আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের আওতায় জামিন মঞ্জুরের ক্ষেত্রে কঠোর শর্তও বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট।