দুই বোন। বয়সে দু'জনই কিশোরী এবং দু'জনই জাতীয়স্তরের কবাডি খেলোয়াড়। হঠাৎ, জানা গেল, তাদের দু'জনেরই মৃত্যু হয়েছে। সেটাও সপ্তাহ খানেক আগে। এবং তাদের বাবা-মা কাউকে কিছু না জানিয়ে দুই বোনেরই শেষকৃত্য সেরে ফেলেছেন!
উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফনগরের এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কারণ, পুলিশ তো দূরের কথা, ওই দুই কিশোরী যে মারা গিয়েছে এবং তাদের দেহ যে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটা তাদের প্রতিবেশীরা পর্যন্ত জানতে পারেননি!
শুক্রবার স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা একথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। তাঁরা ইতিমধ্যেই প্রয়াত দুই বোনের বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করছেন।
মুজাফ্ফরনগরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি - গ্রামীণ) আদিত্য বনসল জানিয়েছেন, প্রয়াত দুই কিশোরীর বয়স যথাক্রমে ১৭ এবং ১৬ বছর। তারা ফুগানা থানার অন্তর্গত একটি গ্রামের বাসিন্দা ছিল। দাবি করা হচ্ছে, গত ১৭-১৮ জানুয়ারির রাতে বাড়িতেই তাদের মৃত্যু হয়।
তাদের বাবা-মায়ের দাবি, ১৮ তারিখ ভোরে বা সকালে তাঁরা দুই মেয়েকে মৃত অবস্থায় আবিষ্কার করেন এবং ওই দিনই তাদের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন করেন। অথচ, স্থানীয় বাসিন্দারা পর্যন্ত একথা জানতে পারেনি!
কিন্তু, পরে কোনওভাবে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায় এবং সোশাল মিডিয়ায় এই সংক্রান্ত কিছু তথ্য ভাইরাল হয়। তখনই পুলিশের নজরে আসে এই ঘটনা এবং তারা মৃত দুই কিশোরীর বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তাঁদের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়।
দুই কিশোরীর বাবা পুলিশের কাছে দাবি করেন, তাঁদের দুই সন্তান বিষাক্ত কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। কারণ, তারা বাবার কাছে দু'টি মোবাইল ফোন চেয়েছিল। কিন্তু, ওই ব্যক্তি মেয়েদের তা কিনে দিতে রাজি হননি।
পুলিশের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ওই দম্পতির মোট আটটি সন্তান রয়েছে। তার মধ্যে সাতটি কন্যাসন্তান এবং একটি পুত্রসন্তান। যে দুই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে, তারা এই দম্পতির মেজো এবং সেজো সন্তান ছিল।
পুলিশের কাছে ওই দম্পতি দাবি করেছে, তাদের দুই মেয়ে যখন আত্মহত্যা করে, তখন তাঁরা এবং তাঁদের পাঁচ সন্তান বাড়িতেই ছিল। তাঁদের বড় মেয়ে বিবাহিতা। তাই তিনি সেখানে ছিলেন না।
ওই দম্পতি পুলিশের কাছে এমন কিছু নথি পেশ করেছেন, যা থেকে জানা গিয়েছে, প্রয়াত দুই কিশোরী জাতীয়স্তরের কবাডি খেলোয়াড় ছিল। তারা ন্যাশনাল ইউথ গেমসে অংশগ্রহণ করেছিল এবং সেখান থেকে গত ৭ জানুয়ারি বাড়ি ফিরেছিল। গত ৪ এবং ৫ জানুয়ারি ওই দুই বোন মহারাষ্ট্রের আয়োজিত সংশ্লিষ্ট ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল।
কিন্তু, এই গোটা ঘটনা নিয়ে পুলিশ এখনও ধোঁয়াশায় রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।