ওড়িশায় গেরুয়া সুনামিতে ধুয়ে মুছে সাফ বিজেডি। লোকসভা এবং বিধানসভা দুটিতেই ধরাশায়ী হয়েছে নবীন পট্টনায়কের দল। প্রায় ২৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা নবীন সাম্রাজ্যের পতনের পর এবার সেখানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়তে চলেছে বিজেপি। ২৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম লজ্জার হার দেখতে হয়েছে নবীন পট্টনায়ককে। পরাজয়ের পরেই জনাদেশকে শিরোধার্য করে রাজ্যপালের কাছে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন নবীন পট্টনায়ক। তবে দলীয় বিধায়কদের চাঙ্গা রাখতে বিশেষ বার্তা দিলেন বিজেডি সুপ্রিমো।
আরও পড়ুন: ম্যাজিক ফিগার পার BJP, ওড়িশা দখলের পথে মোদীরা
পরাজয়ের পরে নবীন পট্টনায়ক তাঁর সরকারের ২৫ বছরের কৃতিত্বের কথা তুলে ধরেন। বিশেষ করে ওড়িশার উন্নয়নের জন্য তাঁর সরকার কী কী কাজ করেছিল? মানুষের উন্নয়ন এই সমস্ত বিষয় তুলে ধরেন। হারের পরে দলীয় বিধায়কদের এনিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি মনে করিয়ে দেন, তিনি যখন রাজ্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তখন জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করত। তাঁর ২৪ বছরের মেয়াদে তিনি এটিকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছেন। তিনি বলেন, ’আমি যখন প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলাম, তখন ওড়িশার ৭০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করত। এখন মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ এর নীচে বাস করে। কৃষি ও সেচ খাতে এবং নারীর ক্ষমতায়নে আমাদের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। আমাদের লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই।’ দলের নবনির্বাচিত বিধায়কদের রাজ্যের জন্য কাজ করে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন।
গতকাল নবীন বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পরে রাজ্যপাল রঘুবর দাসের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেন। উল্লেখ্য, লোকসভায় ২১টি আসনের মধ্যে একটিও জিততে পারেনি বিজেডি। অন্য দিকে বিজেপি পেয়েছে ২০টি আসন। ১টি আসন পেয়েছে কংগ্রেস। বিধানসভায় ১৪৭টি আসন বিশিষ্ট ওড়িশা বিধানসভাতেও ৭৮টি আসন জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে বিজেপি। ৫১টি আসন পেয়েছে বিজেডি। অন্যদিকে, কংগ্রেস পেয়েছে ১৪টি। বাকিরা ৪টি। অর্থাৎ বিরোধীদের সঙ্গে জোট করেও ওড়িশায় সরকার গঠন করা বিজেডির পক্ষে সম্ভব নয়।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের মতে, পট্টনায়কের পদত্যাগ ওড়িশার রাজনীতিতে একটি যুগের অবসান। তিনি ২০০০ সালের মার্চ প্রথমবারের মতো ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন এবং তারপর থেকে চারবার পুনর্নির্বাচিত হন। বিজেডি বিধায়ক অরুণ সাহু নবীনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘নবীন পট্টনায়ক বড় মনের মানুষ। তিনি আমাদের রাজ্যের মানুষের সেবা করতে বলেছেন। আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’